|
|
|
|
জ্বর-ব্যথা ছড়াচ্ছে চা বাগানে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
হুহু করে বাড়ছে উত্তাপ। সঙ্গে গাঁটে ব্যাথা। কিছুক্ষণের মধ্যে শরীরে ছড়াচ্ছে লাল গোটা। ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের ভুটান সংলগ্ন সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগান এলাকা জুড়ে এমনই জ্বরের প্রকোপ চলছে। রক্তের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এক সপ্তাহ পরেও না মেলায় রোগের কারণ জানা যায়নি। এমনকী পরিস্থিতির কথা জানানোর পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার অবশ্য বলেন, “সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে কালচিনি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত মেডিক্যাল টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।” চা বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন সপ্তাহ থেকে এলাকায় আজানা জ্বরের প্রকোপ চলছে। বাগানের রাঙ্গামাটি ডিভিশনের রোগ বেশি ছড়িয়েছে। বাগানের হাসপাতাল থেকে জ্বর, গায়ে ব্যাথা ও অ্যালার্জির ট্যালেট দিয়ে চিকিৎসার কাজ চলছে। সোমবারেও হাসপাতালে ৪০ জন রোগীর ভর্তি ছিলেন। তবে বেশিরভাগ বাসিন্দা রোগীকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসার চেষ্টা চালানোয় বাগান কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক রূপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তিন সপ্তাহে প্রায় ছয়শো বাসিন্দা অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। রোগীদের জ্বরের সঙ্গে গাঁটে ব্যাথা হচ্ছে। শরীরে ছোট ছোট লাল গোটা দেখা দিচ্ছে।” বাগান কর্তৃপক্ষ জ্বরের কারণ জানতে এক সপ্তাহ আগে ৫০ জন রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে কালচিনি ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে কলকাতায় পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এখনও রিপোর্ট পৌঁছয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় শুরু হয়েছে সাফাই অভিযান। রূপকবাবু বলেন, “আমরা বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। স্বাস্থ্য দফতর থেকে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হলে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।” সোমবার বাগানে গিয়ে দেখা যায় ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত রোগী। স্থানীয় বাসিন্দা মাধব প্রাসদ বলেন, “দু’দিন থেকে জ্বর হচ্ছে। সঙ্গে হাঁটু, পায়ের গোড়ালি, হাতের কুনুইয়ে যন্ত্রণা। এতটাই ব্যাথা যে হাত পা ভাজ করা যাচ্ছে না।” বাগানের শ্রমিক লাইনের বাসিন্দা বাপি থাপা জানান, জ্বরের সময় প্রস্রাবে জ্বালা বাড়ছে। সঞ্জনা রাই, বিশাখা শর্মা মতো রেগীরা বলেন, “জ্বরের কিছুক্ষণ পরে গায়ে লাল ছোট গোটা হচ্ছে।” মেঘরাজ থাপা ও প্রহ্লাদ বিশ্বকর্মা নামে দুই বাসিন্দা জ্বর নিয়ে কয়েকদিন আগে বাগানের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে ফের জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। মেঘরাজ বলেন, “ক্রমশ দুর্বলতা বেড়ে চলেছে। কী করব বুঝতে পারছি না।” জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কালচিনি এলাকা থেকে নির্বাচিত আরএসপি সদস্য রামকুমার লামা বলেন, “পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এলাকায় দ্রুত মেডিক্যাল টিম পাঠানোর জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং বিডিও-কে অনুরোধ করেছি।” |
|
|
|
|
|