বেরুবাড়ি
স্কুলে তাণ্ডব, ভাঙচুর হল পুলিশের গাড়ি
স্কুলে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে পুলিশের দু’টি গাড়ি ভাঙচুর করা হল জলপাইগুড়ির বেরুবাড়িতে। সোমবার দুপুরে বেরুবাড়ি গমিরাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এক দল ছাত্র ও কয়েকজন অভিভাবক। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে চড় মারার প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষককে তাঁরা আটকে রাখেন। তারপরে স্কুলের অফিস, ঘরদোর, চেয়ার টেবিলও ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-ঢিল ছোড়া হয়। আক্রমণের মুখে পড়ে প্রথমে পিছু হটে পুলিশ। পরে লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ততক্ষণে এক জন ছাত্র ও দু’জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফেটে জখম হয়েছেন এক সাংবাদিকও। জখমদের সকলকেই জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রাণবন্ধু সরকার বলেন, “তখন অফিসে বসে কাজ করছিলাম। এক ছাত্র বিনা অনুমতিতে ঘরে ঢুকে শংসাপত্রে সই করতে বলে। বিনা অনুমতিতে ঢোকায় তাকে বকাবকি করে একটু পরে আসতে বলি।
স্কুলে গণ্ডগোলের জেরে ভাঙচুর হয়েছে পুলিশের গাড়িও। —নিজস্ব চিত্র
তাতেও ছাত্রটি গোঁ ধরে তর্ক করতে থাকে। তখন ওকে একটি চড় মেরেছি। পরে অন্য ছাত্রদের এনে মারমুখী হয়ে উঠল ছাত্রদের একাংশ।” তাঁর কথায়, “শৃঙ্খলা শেখাতে শাসন তো করতেই হবে। তাতে অভিভাবকেরা ক্ষেপে গেলে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ কী হবে!”
দুপুর থেকে গোলমাল চলছিল। পুলিশও ছিল। তা হলে পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত হল কেন? জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “ঘটনাটি উদ্বেগজনক। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেব।” পুলিশ সুপার জানান, দুর্বব্যহারের অভিযোগ তুলে দীর্ঘক্ষণ ধরেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে রেখেছিল ছাত্ররা। দুপুরের পরে হঠাৎই প্রধান শিক্ষকের ঘরে ভাঙচুর শুরু করে একদল ছাত্র। পুলিশ সুপারের দাবি, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। এক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে। পুলিশের দু’টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। দু’জন পুলিশকর্মী গুরুতর ভাবে জখম। একজন ছাত্র, একজন সাংবাদিক জখম হয়েছেন। কী পরিস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
আন্দোলনকারী ছাত্রদের কয়েকজনের অবশ্য অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক সামান্য কারণেই ছাত্রদের গায়ে হাত তোলেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এদিন ওই ছাত্রকে চড় মারার পরে শংসাপত্রও ছিঁড়ে ফেলেন প্রধান শিক্ষক। এর পরেই উত্তেজিত ছাত্রেরা প্রধান শিক্ষকের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে প্রধান শিক্ষক ভিতর থেকে ঘর বন্ধ করে দেন বলে জানা গিয়েছে। বিক্ষোভে সামিল হন অভিভাবকদের একাংশও। স্কুল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনীও ঘটনাস্থলে যায়। প্রধান শিক্ষকের ঘর খোলা হলে ছাত্ররা ঘরে ভাঙচুর শুরু করে বলে অভিযোগ। ছাত্রদের হঠাতে পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করলেই পরিস্থিতি বদলে যায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ। এর পরেই কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। বিকেল নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয় পুলিশ।
স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক উপেন রায় বলেন, “একটা তুচ্ছ ঘটনা। তার জেরে অভিভাবকরা স্কুলে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে শুনেছি। প্রধান শিক্ষককেও হেনস্থা করা হয়েছে। স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ আর নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.