ভরদুপুরে একটি বেসরকারি সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে ডাকাতি হল পুরুলিয়া শহরে। সংস্থার কর্মীরা ভল্ট থেকে টাকা লুঠের দাবি করলেও পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভল্টে তারা গিয়ে টাকা পেয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শহরের প্রায় কেন্দ্রস্থলে বি টি সরকার রোডে পেট্রোল পাম্পের উল্টো দিকে একটি বাড়ির দোতলায় সংস্থার অফিসটি। আদালত ও বাসস্ট্যান্ড প্রায় লাগোয়া। রাস্তায় থিকথিকে ভিড় থাকে। সোমবার দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ ৭-৮ জন দুষ্কৃতী অফিসে হানা দেয়। অফিসে তখন জনা পনেরো কর্মী এবং আরও কয়েক জন ছিলেন। আখতার আনসারি নামে সংস্থার সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী বলেন, “আমি গেটে ছিলাম। আচমকা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আমার বন্দুক কেড়ে ভিতরে এক কোণে ঢুকিয়ে দেয়।” কর্মীদের কথায়, “হঠাৎ দেখি বিভিন্ন জায়গায় সাত-আট জন যুবক পজিশন নিয়েছে। প্রায় সকলের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র। বেশ কয়েক জনের মোবাইল ওরা ফোন কেড়ে নেয়। তার পর সকলকে এক কোণে যেতে বাধ্য করে।” সংস্থার এক মহিলাকর্মী পাপিয়া দাস বলেন, “ওদের মুখে ছিল অশ্লীল গালিগালাজ। সঙ্গে প্রাণে মারার হুমকি।” ওই সময় অফিসের ম্যানেজার ছিলেন না। কর্মীদের কাছ থেকে ভল্টের চাবি নিয়ে টাকা লুঠ করে দুষ্কৃতীরা ধীরেসুস্থেই নীচে নেমে যায়। পালানোর সময় ফের প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর বন্দুকটি অফিসের মধ্যেই ছুড়ে দিয়ে যায় তারা। সংস্থার কর্তা লুকমান আনসারি বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। কর্মীদের কাছে জেনেছি, দুষ্কৃতীরা ভল্ট ও কাউন্টার থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। ভিতরে দুষ্কৃতীরা একটি গুলিও ছুড়েছে।” পুরুলিয়া পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই সংস্থার কর্মীরা বলছেন দুষ্কৃতীরা ভল্ট থেকে টাকা নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তদন্তে গিয়ে ভল্টে টাকা পাওয়া গিয়েছে। দুষ্কৃতীরা যদি ভল্ট থেকেই টাকা লুট করে, তা হলে সেই ভল্টে কেন লক্ষাধিক টাকা ফেলে রেখে যাবে! যাই হোক ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।” দুষ্কৃতীরা শহর থেকে রাঁচি রোড ধরে পালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে। পুলিশ সুপার বলেন, “ওই রাস্তায় ও অন্য এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।” তবে, অফিসের ভিতরে গুলি চলেছে বলে সংস্থার কর্তা যে দাবি করেছেন, সে প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, “তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।” |