ছুটির দিনেও স্কুলে যান তিনি। পড়ুয়াদের প্রতি সদা স্নেহশীল মনোতোষবাবুর ধ্যান জ্ঞান সবকিছুই স্কুলকে কেন্দ্র করে। যেন স্কুল অন্ত প্রাণ। ইংরেজির শিক্ষক মনোতোষবাবু চাকদহ বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এ বছর জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন। আদর্শ শিক্ষক মনোতোষবাবু রাষ্টপতির হাত থেকে পুরস্কার নিতে পাড়ি দিয়েছেন দিল্লি। তাঁর এই স্বীকৃতিতে গোটা স্কুল জুড়ে বাঁধভাঙা আনন্দ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবক সকলেই আনন্দে আত্মহারা। |
ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র মনোতোষবাবুর ১৯৯০ সালে বিষ্ণপুর হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। চাকদহ শহর থেকে বেশ খানিকটা ভিতরে এই স্কুল। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু দিনের মধ্যেই স্কুলের হাল ফিরতে শুরু করে। আসলে শিক্ষকতাকে তিনি কোনওদিন পেশা হিসেবে নেননি। নিয়েছেন জীবনের ব্রত হিসেবে। “ছাত্রদের প্রকৃত মানুষ করে তোলাই একজন শিক্ষকের জীবনের একমাত্র কাজ”—স্বগোতক্তি মনোতোষবাবুর। স্যারের শিক্ষায় শিক্ষিত স্কুলের প্রাক্তনীরা স্মরণ করছেন জীবনে মাস্টার মশাইয়ের অবদানের কথা। তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা আজ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নামের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রিয় স্যারের এই স্বীকৃতিতে তাঁর আজ দৃশ্যতই বাকরুদ্ধ। অভিভাবকেরা বলছেন, মনোতোষবাবু হেড মাস্টার হিসেবে স্কুলে শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছেন। দক্ষ হাতে পরিচালনা করে চলেছেন স্কুল।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসিরুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “তিনি যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন। স্কুলের উন্নয়নের জন্য তিনি সব সময়ই ভাবেন। মানুষ হিসেবেও তুলনাহীন। আমার এ রকম একজন মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পারার জন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে খবরটা শোনার পরেই স্যারকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়েছি।”
যাঁকে নিয়ে এত উচ্ছ্বাস তিনি কিন্তু অদ্ভুতভাবে শান্ত। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সংক্ষেপে সবিময়ে বলেন, আমি আমার দায়িত্ব পালন করে চলেছি মাত্র। |