|
|
|
|
|
খেলার খবর |
মহিলা ফুটবলারদের উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
|
এক দিকে তেহট্ট মহকুমা জুড়ে রমরমিয়ে চলছে আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থাগুলির পরিচালনায় ফুটবল লিগ। অন্য দিকে ইন্টার স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার পাশাপাশি চলছে বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোগে নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতাও। এর মধ্যে নদিয়া জেলা পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে রবিবার থেকে শুরু হল তেহট্ট মহকুমা সম্পর্ক ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। মহকুমার তেহট্ট, করিমপুর, হোগলবেড়িয়া, মুরুটিয়া ও থানারপাড়া এই পাঁচটি থানাই অংশগ্রহণ করছে প্রতিযোগিতায়। রবিবার তেহট্ট মাঠে ওই প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র। রবিবার তেহট্ট মাঠে তেহট্ট থানা ৪-০ গোলে থানারপাড়া থানাকে পরাজিত করে। সোমবার করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটের মাঠে করিমপুর থানা ৩-১ গোলে মুরুটিয়া থানাকে পরাজিত করে।
জমে উঠেছে করিমপুরের লিগের খেলাও। সিনিয়র প্রথম ডিভিসনের খেলায় শুক্রবার যমশেরপুর মাঠে কেচুয়াডাঙা ক্লাব ও পুঁটিমারি নিউ চাঁদ তারা স্পোর্টিং ক্লাবের খেলা অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। ওই দিনই শিশা মাঠে সেনপাড়া পল্লিশ্রী সংঘ ৩-০ গোলে পন্ডিতপুর মিলন সংঘকে পরাজিত করে। রবিবার মহিষবাথান মাঠে শিশা নেতাজি ক্লাব ৩-০ গোলে উত্তর কৃষ্ণপুর স্বস্তি সংঘকে হারিয়ে দেয়। করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটের মাঠে নতিডাঙা তরুণ সংঘ ২-০ গোলে যমশেরপুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারায়।
পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এক দিনের কিংবা রাতভর চলা নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতাগুলোও রীতিমত উৎসবের চেহারা নিয়েছে। ২৫ অগস্ট গোয়াস অনির্বাণ ক্লাবের পরিচালনায় ১৬টি দল নিয়ে এক নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গড়াইমারি ক্লাব। ২৩ অগস্ট ইলশামারি নবীন সংঘের পরিচালনায় ১৬ দলের নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলরামপুর ক্লাব। ২৭ অগস্ট কাঁঠালিয়া কল্যাণ সংঘের পরিচালনায় একদিনের নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মহিষাখোলা ভবা পাগলা ক্লাব। ২ সেপ্টেম্বর রবিবার মোট ১৬টি দল নিয়ে এক নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল দিঘলকান্দি কিশোর সংঘ। এদিনের খেলায় বেতাই মিতালি সংঘ ৪-০ গোলে অম্বরপুর মধুরকুল ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতা এখন গ্রামের মানুষের কাছে একটা বড় উৎসব। প্রতিবছর ২ সেপ্টেম্বর তারিখেই এই প্রতিযোগিতা হয়। ২০০৬ সালেই প্রথম এই ধরনের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন দিঘলকান্দির সমীর মণ্ডল নামে এক ফুটবল পাগল যুবক। সেবারও খেলার দিন ঠিক হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে ওই বছরই ২৩ অগস্ট মারা যান সমীরবাবু। তবে সে বার কিন্তু খেলা বন্ধ হয়নি। ওই যুবককে শ্রদ্ধা জানাতে সেই বছর থেকেই নিয়মিত খেলাটা চালিয়ে আসছে দিঘলকান্দি কিশোর সংঘ। সমীরবাবুর স্মৃতিতে পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হয় সমীর স্মৃতি কাপ। দূরদুরান্ত থেকে মানুষ আসেন সীমান্তঘেঁষা দিঘলকান্দি গ্রামে এই খেলা দেখতে। এ বারের ওই নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতায় সব থেকে বড় আকর্ষণ ছিল গ্রামেরই জনা কুড়ি মহিলা ফুটবলার। গত কয়েক মাস ধরে অনুশীলনের পর এদিন প্রথম মাঠভর্তি দর্শকের সামনে ওই কুড়ি জন মেয়ে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলে। হ্যালোজেনের আলোয় ভেসে যাওয়া মাঠে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে রীতিমত তাদের কুর্নিশ জানাল হাজার চারেক দর্শক। সীমান্তের ওই প্রত্যন্ত গ্রামে বোধহয় এটাই ছিল এদিনের সব থেকে বড় প্রাপ্তি। |
|
|
|
|
|