|
|
|
|
|
খেলার খবর: সাঁতার |
ছ’বছর পরে ফের মিলল শংসাপত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
|
বিগত ছ’বছর পরে রবিবার সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীর হাতে সর্বভারতীয় সংস্থা সুইমিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া সংক্ষেপে এসএফআই-এর শংসাপত্র তুলে দিতে পেরেছে আয়োজক সংস্থা মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন।
গত ছ’বছরে যা হয়নি, মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের নতুন পরিচালন কমিটি এবছর তাই করে দেখাল। ফলে ৮১ কিমি ও ১৯ কিমি (পুরুষ ও মহিলা) মিলিয়ে ৮৩ জন প্রতিযোগীর হাতে ওই শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে খুশি প্রতিযোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। সর্বভারতীয় ওই সংস্থার সহ-সভাপতি রামানুজ মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিযোগীদের ওই শংসাপত্র দেওয়ার জন্য মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। সেই মত চেন্নাইয়ে গত ১১ জুলাই সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় ওই আবেদন মেনে নেওয়া হয়। প্রতিযোগিতার সমস্ত পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে এবারের জন্য ওই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। আগামী বারের জন্য ওই কমিটিকে ফের আবেদন করতে হবে।”
এর আগে গত ২০০৫ সালে শেষ বারের মত ওই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। পরের বার ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতিযোগীদের সুইমিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া সংক্ষেপে এসএফআই-এর শংসাপত্র দেওয়া হত না। ২০০৬ সালে ৮১ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতায় লাতিন আমেরিকার প্রতিযোগী মার্কোস ডিয়াজ অংশগ্রহণ করেন। বিদেশি ওই সাঁতারু প্রতিযোগীর অংশগ্রহণকে ঘিরে রাজ্য সংস্থা ‘বেঙ্গল অ্যামেচার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আয়োজক সংস্থার ‘মতবিরোধ’ দেখা দেয়। যার জেরে সর্বভারতীয় সংস্থা এসএফআই তাদের শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ।
রামানুজবাবু অবশ্য বলেন, “কোনও বিদেশি সাঁতারু প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে সর্বভারতীয় সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু আয়োজক সংস্থা ওই অনুমতি নেয়নি। ফলে শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে এসএফআই নিষেধাজ্ঞা জারি করার পাশাপাশি আয়োজক সংস্থাকে শো-কজ করা হয়। পরে অবশ্য তারা ভুল স্বীকার করে নিয়েছে।”
এদিকে ভাগীরথীতে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ৮১ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতা। তা সত্ত্বেও প্রতিযোগীদের সর্বভারতীয় সংস্থার শংসাপত্র দিতে না পারার বিষয়টিও আয়োজক সংস্থার পক্ষে অসম্মানের। এর মধ্যে গত ১২ এপ্রিল আয়োজক সংস্থার নতুন পরিচালন কমিটি নির্বাচিত হয়। এর পরেই নতুন ওই কমিটি প্রতিযোগীদের শংসাপত্র দেওয়ার জন্য কাছে আবেদন জানায় এবং সর্বভারতীয় সাঁতার সংস্থা তা মেনে নেয়। আয়োজক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আশিস ঘোষ বলেন, “এবছর সর্বভারতীয় সংস্থার শংসাপত্র দিতে পেরেছি। এতে আমাদের হারানো সম্মান ফিরেছে।”
রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় গোরাবাজার ঘাট লাগোয়া মঞ্চ থেকে ৮১ কিমিতে প্রথম তিনজন প্রতিযোগীকে ২৪ ক্যারেটের গোল্ড মেডেল-সহ যথাক্রমে নগদ ৫১ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয় জেলার ঐতিহ্যময় কাঁসার থালা, কারুকাজ করা শোলার সামগ্রী। এছাড়াও চতুর্থ থেকে দশম স্থান পেয়েছেন, তাঁদের রুপোর মেডেল-সহ ন্যূনতম ২ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়। অন্য দিকে ১৯ কিমিতে দু’বিভাগের প্রথম তিন জনকে সোনার মেডেল-সহ নগদ সাত-ছয়-চার হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৮৩ জন প্রতিযোগী ও সঙ্গী দুজন করে কর্মকর্তা-সহ পরিবারের সদস্যদের প্রতিযোগিতার দু’দিন আগে থেকে সমস্ত থাকা-খাওয়ার দায়িত্বও ছিল আয়োজক সংস্থার উপরে।
রামানুজবাবু বলেন, “এত বড় মাপের আয়োজন করার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে, এক্ষেত্রেও হয়েছে। তার চেয়ে গত ৬৯ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করার যে কৃতিত্ব, তা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে ক্রিকেট বা টেনিস ছাড়া অন্য কোনও খেলায় ২৪ ক্যারেটের গোল্ড মেডেল দেওয়া হয় কিনা আমার জানা নেই!” |
|
|
|
|
|