‘কোভারম্যান্সের মধ্যে হাউটনের চেয়ে বেশি আন্তরিকতা দেখছি’
জাতীয় দলে তাঁর ছদ্ম নাম ‘লিটল ম্যান’। কোচ উইম কোভারম্যান্সের সৃষ্টি। নামের অর্থ যাই হোক, প্রতিভা এবং দক্ষতার বিচারে মোটেও ‘লিটল’ নন। বরং রবিবার নেহরু কাপ ফাইনালের সেরা ফুটবলার হয়ে রহিম নবি বুঝিয়ে দিলেন, সুনীল ছেত্রীদের থেকে তিনি কোনও অংশে কম যান না। সোমবার দমদম বিমানবন্দরে পা রেখেই ছুটলেন পাণ্ডুয়ার দেশের বাড়িতে। তার আগে গাড়িতে যেতে যেতে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন নানা অনুভূতির কথা...

প্রশ্ন: ভারতের সঙ্গে আপনিও তো নেহরু কাপ জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন?
নবি: হ্যাঁ, আমার ফুটবল জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব।

প্র: সিরিয়া না ক্যামেরুন? কাকে হারিয়ে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেলেন?
নবি: অবশ্যই ক্যামেরুন।

প্র: কেন?
নবি: এত দিন শুধু ক্যামেরুনকে টিভিতে খেলতে দেখতাম। কখনও ভাবিনি সেই দেশের বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়ব। দেশটা বিশ্বকাপ খেলেছে। আফ্রিকার বহু টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন। তাদের হারানোর অনুভূতিটা একেবারে আলাদা।

প্র: কিন্তু ক্যামেরুন তো দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে এসেছিল....
নবি: তাতে কী হয়েছে? ক্যামেরুন নামটা তো পাল্টে যায়নি। শারীরিক ক্ষমতা কিংবা ফুটবল স্কিল সব জায়গাতেই ওরা এগিয়ে। শুধু আমাদের হার না মানা মনোভাবের সামনে দাঁড়াতে পারল না।

প্র: তিন বারের মধ্যে এই প্রথম নেহরু কাপের ম্যাচে সেরার পুরস্কার পেলেন। সেটাও আবার ফাইনালে।
নবি: এই মুহূর্তটার জন্য তিন বছর অপেক্ষা করছিলাম। ওপরওয়ালাকে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু তার চেয়েও বেশি আমার কোচ মুরারিমোহন সুরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার স্ত্রী সোমার যখন গাড়ি দুর্ঘটনা হয়, তখন বেশ কিছু দিন নিয়মিত মোহনবাগানের প্র্যাক্টিসে আসতে পারিনি। বর্ধমানে ছিলাম। সেই সময় মুরারিস্যর অসুস্থ শরীর নিয়েও আমাকে প্র্যাক্টিস করাতে আসতেন। ‘ম্যান অব দ্য ফাইনালে’র ট্রফিটা আমি স্যর আর সোমাকে উৎসর্গ করতে চাই।
শহরে ফিরে নবি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
প্র: বব হাউটন না উইম কোভারম্যান্স। কার কোচিং বেশি উপভোগ করলেন?
নবি: হাউটনের অধীনে চার বছর খেলেছি। সেখানে কোভারম্যান্স সবে এসেছেন। এত তাড়াতাড়ি এক জনকে এগিয়ে, এক জনকে পিছিয়ে রাখতে চাই না। তবে হ্যাঁ, একটা কথা বলতে পারি। কোভারম্যান্সের কোচিংয়ে অনেক বেশি আন্তরিকতা আছে।

প্র: দু’জনের মধ্যে কী পার্থক্য দেখলেন?
নবি: হাউটন ‘লং বল’ খেলতে পছন্দ করতেন। কোভারম্যান্স ‘গ্রাউন্ড ফুটবল’। হাউটন জোর দিতেন ডিফেন্সিভ ফুটবলে। সেখানে কোভারম্যান্সের মন্ত্র হল প্রত্যেক সেকেন্ডে অ্যাটাক। এখন অনেক বেশি ওপেন ফুটবল খেলছি আমরা। একটা বল ডিফেন্স থেকে ক্লিয়ার করেই সঙ্গে সঙ্গে উঠে যাচ্ছি ওপরে। যাতে অ্যাটাকিং থার্ড আর মিডল থার্ডের মধ্যে ফাঁকা জায়গা তৈরি না হয়। কোভারম্যান্সের একটা গুণ হল, মাঠে কোনও ভুল-ভ্রান্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে কিছু বলেন না। পরে ম্যাচের ক্যাসেট কিংবা সিডি দেখিয়ে ভুলগুলো শুধরে দেন।

প্র: তা হলে বলছেন, কোভারম্যান্সের হাতে ভারতীয় ফুটবল নিরাপদ?
নবি: ফেডারেশন সঠিক লোককে এনেছে। আমাদের সঙ্গে একেবারে বন্ধুর মতো মেলামেশা করেন। হাউটন টিম হোটেলে আমাদের সঙ্গে থাকতেন না। সব সময় তাঁর জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকত। কোভারম্যান্স ফুটবলারদের সঙ্গে সময় কাটাবেন বলে টিম হোটেলেই থাকেন। আমরা এখন কোনও কাজ আলাদা করি না। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে, ঘোরাফেরাসব কিছু একই সঙ্গে। কোভারম্যান্স অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ।

প্র: ভাইচুং ভুটিয়া না সুনীল ছেত্রী। অধিনায়ক হিসেবে কাকে এগিয়ে রাখবেন?
নবি: ভাইচুংয়ের সঙ্গে সুনীলের তুলনা হয়না। ভুটিয়া ভাইকে কেউ টপকাতে পারবে না। ভাই দশ বছর অধিনায়কত্ব করেছে। সেখানে সুনীলের এটা প্রথম টুর্নামেন্ট। তুলনার প্রশ্নই নেই। স্ট্রাইকার হিসেবে বিচার করলে দু’জনের মধ্যে একটাই পার্থক্য আমার চোখে পড়ে। ভাইচুংয়ের তুলনায় সুনীল ভাল বল প্লেয়ার। আন্তর্জাতিক ফুটবলে দু’তিন সেকেন্ড বল ধরে খেলতে পারাটাই অনেক। সুনীল কিন্তু বল ‘হোল্ড’ করে খেলতে পারে।

প্র: সুনীল নেতা হিসেবে কেমন?
নবি: দলকে তাতাতে পারে। দিল্লির ছেলে তো, গুছিয়ে কথা বলতে জানে। ওর মধ্যে ভবিষ্যতে বড় নেতা হওয়ার সব গুণ আছে।

প্র: জাতীয় দলের এখনও কোন জায়গায়টায় আরও কাজ করতে হবে বলে মনে হচ্ছে?
নবি: আরও বেশি পাস খেলতে হবে। আর সেটা করতে আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে হবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.