কেটে গিয়েছে চারটি বছর। ২০০৮ সালে যখন প্রথম বার বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছিলেন সেই সময়ের সঙ্গে কতটা ফারাক রয়েছে আজকের? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ডেমোক্র্যাটরাই বলছেন, ৪ বছর আগে বারাক ওবামাকে নিয়ে মার্কিন ভোটারদের মধ্যে যে উৎসাহ ছিল, এখন তার ছিটেফোঁটাও আর চোখে পড়ছে না। খুব একটা ভিড় হচ্ছে না তাঁর প্রচার সভাগুলিতে। কিন্তু মানুষ যে ওবামা প্রশাসনের কাজে অখুশি তাও বলা যাবে না বলেই মনে করছেন ওবামাপন্থী গভ মার্টিন।
আর ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রোমনি? ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, দেশকে ভুল দিকে নিয়ে যেতে চাইছেন তিনি।
বর্তমান প্রেসিডেন্টের হয়ে প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্টিফানি কাটার বলছেন, “চার বছর আগে যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন দেশের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। অর্থনৈতিক দুর্দশার শেষ সীমায় দাঁড়িয়ে আমেরিকা তখন বেকারত্বের সমস্যায় জর্জরিত। গত চার বছরে সরকার চেষ্টা করেছে করের বোঝা কমানোর। ব্যাঙ্কগুলিকে দেউলিয়া হওয়া থেকে রুখতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে যাতে দেশের অর্থনীতি ভেঙে না পড়ে। এই ক’বছরে মানুষের অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তাই ভোটারদের ‘অখুশি’ হওয়ার প্রশ্নই উঠছে না।”
মিট রোমনির সমালোচনা করে গত কাল ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “প্রেসিডেন্ট পদের রিপাবলিকান প্রার্থীর বক্তৃতাগুলো শুনে তো মনে হচ্ছে, তিনি ইরান এবং সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলছেন ইরাকে যুদ্ধ শেষ করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে সরকার ভুল করেছে। আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষের তারিখ ঘোষণা করে সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তও ভুল বলে মনে করেন তিনি।” বাইডেন বলেন, “গত ৩০ বছরে বিদেশ নীতির কোনও বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি এমন এক রাজনীতিবিদ সরকারের যথাযথ মূল্যায়ন করবেন তা আশা করা যায় না।”
রোমনির আফগান নীতির সমালোচনা করে ভোটারদের আস্থা অর্জন করার কাজে পিছিয়ে নেই খোদ বারাক ওবামাও। আজ তিনি বলেন, “আমি সময়সীমা মেনে চলছি। কথা দিয়েছি ২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু রোমনি সময়সীমা মানছেন না। তিনি বলেই দিয়েছেন, ২০১৪ সালের মধ্যে সেনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এমনকী আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তও ভুল বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। আমি মনে করি তিনি ভুল বলছেন।”
তবে ডেমোক্র্যাটদের আক্রমণের মুখে থেমে নেই রিপাবলিকানরাও। রোমনির প্রচার মুখপাত্র আমান্ডা হেনেবার্গ বলেন, “ওবামাপন্থীরাই বলছে চার বছর আগে দেশের যা অবস্থা ছিল, তা বিশেষ বদলায়নি। দেশের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়ায়নি, মধ্যবিত্তের অবস্থাও বিশেষ বদলায়নি। আমাদের বিকল্প রাস্তায় হাঁটতে হবে।” |