আতঙ্ক কাটেনি, নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি অভিভাবকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
পুষ্পা ঠাকুরের মৃত্যুর ঘটনার পরে আতঙ্কিত এলাকার অন্য ছাত্রীরা। অনেকেই স্কুলে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছে। যাওয়া-আসার পথে ছাত্রীদের আরও বেশি পুলিশি নিরাপত্তার আর্জি জানিয়ে সোমবার হিরাপুর থানায় লিখিত আবেদন করেছেন মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা। পুলিশের আশ্বাস, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
৭ অগস্ট বার্নপুরে ইস্কো পরিচালিত একটি প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী, নবঘণ্টির বাসিন্দা পুষ্পা ঠাকুর পরীক্ষা দিতে যায়। আর বাড়ি ফেরেনি। পরের দিন সকালে তার দেহ উদ্ধার হয় স্কুল থেকে প্রায় ৭০ মিটার দূরে ইস্কোর একটি ফাঁকা আবাসন সংলগ্ন ঝোপে ঢাকা নর্দমায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য জানান, এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে অনেক ছাত্রী স্কুলে আসা বন্ধ করেছে। তিনি বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ছাত্রীরা কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কিছু ক্ষেত্রে গুজবের শিকারও হচ্ছে। ফলে দূরদূরান্তের ছাত্রীরা স্কুলে আসতে চাইছে না।” নিবেদিতাদেবীর মতে, এই অবস্থায় স্কুলের সময়ে তাদের যাওয়া-আসার পথে যদি নিয়মিত পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা যায় তবে ছাত্রীদের মনোবল বাড়বে। স্কুলে উপস্থিতিও বাড়বে। সোমবার অভিভাবকদের প্রথমে স্কুলে ডেকে পাঠান প্রধান শিক্ষিকা। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা সেরে অভিভাবক ও অন্য শিক্ষিকাদের নিয়ে হিরাপুর থানায় গিয়ে নিরাপত্তার জন্য লিখিত আর্জি জানান। |
হিরাপুর থানায় বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র। |
অন্য শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের বক্তব্য, এই স্কুলটি অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় অবস্থিত। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করতে আসে। প্রতি দিন বেশ কিছুটা ফাঁকা রাস্তা পায়ে হেঁটে তারা স্কুলে যাতায়াত করে। তাঁরা এ দিন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, স্কুলে যাওয়ার সময়ে এবং ছুটি হওয়ার পরে কিছু বহিরাগত যুবক স্কুলের সামনে জটলা করে। অনেকে যাতায়াতের পথে ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে জটলা করে, ছাত্রীদের উত্ত্যক্তও করে। প্রধান শিক্ষিকা জানান, পুষ্পা ঠাকুরের খুনের ঘটনার কয়েক দিন পরে তাঁদের স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে কিছু বহিরাগত যুবক। এ সবের ফলে অন্য ছাত্রীরা আতঙ্কিত। শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের আর্জি, স্কুল সংলগ্ন রিভারসাইড, সামডিহি, কালাঝড়িয়া, ধেনুয়া-সহ আশপাশের অঞ্চলে ও ফাঁকা রাস্তায় সকাল ১০টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৪টে থেকে ৫টা পর্যন্ত নিয়মিত পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা করা হোক।
হিরাপুর থানার পুলিশ জানায়, এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। স্কুলে যাতায়াতের পথে আরও টহলদারি বাড়ানো হবে। স্কুলগুলির সামনে ও আশপাশে সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। কোনও রকম গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছে পুলিশ।
|