‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ হঠাৎ একদিন কয়েক জন সাহিত্যপ্রেমির উদ্যোগে জন্ম নেয় লিটল ম্যাগাজিন। তবে মফস্সলের বেশিরভাগ লিটল ম্যাগাজিনে তেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষার চেষ্টা দেখা যায় না। এর মধ্যে কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিনের ভাবনা চমকে দেওয়ার মতো। যেমন সিউড়ি ‘সৃজনকথা’। ওই ম্যাগাজিনটির প্রায় প্রতিটি সংখ্যাই ভাবনার রসদ জোগায়। সম্প্রতি পকেট বুক আকারের সপ্তদশ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে ২৮ জন স্থানীয় কবির দু’টি করে চতুস্পদী কবিতা। তপন গোস্বামী সম্পাদিত ওই সংখ্যায় ‘আমাদের কথা’তে লিপিবদ্ধ হয়েছে (১) ‘রাত্রি ঘন অন্ধকার অমাবস্যা ঢালে/ একটি চুম্বন রাখি আলোর কপালে’। (২) ‘জীবন তো একটাই, রাঙা মাটির খঞ্জনি/ একজন গান গায়, বাকি লোক কান পেতে শুনি।’
|
|
পঞ্চানন মুখোপাধ্যায় |
বাল্যকাল থেকে মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গ্রন্থনা ও স্তোত্র পাঠ শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। যৌবনে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের শিষ্য হওয়ার তাগিদে বহুবার কলকাতায় গিয়েও দেখা পাননি তাঁর। কিন্তু একলব্যের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বলার সেই ভঙ্গি আয়ত্ত করার। দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে তিনি এখন শিল্পী পরিচয় পেয়েছেন। নানুরের চারকল গ্রামের বাসিন্দা উচকরণ হাইস্কুলের সংস্কৃত শিক্ষক পঞ্চানন মুখোপাধ্যায়। তিনি স্তোত্র পাঠ ও মাতৃ আরাধনা নিয়ে চণ্ডী পাঠের গীতি আলেখ্য রচনা করেছেন। স্থানীয় সঙ্গীত শিল্পী ও বাদ্য শিল্পীদের নিয়ে বহু জায়গায় অনুষ্ঠান করে স্রোতাদের মন জয় করেছেন। গীতাপাঠ, ভাগবত পাঠ ও পুরান নিয়ে নানা অনুষ্ঠান করেছেন অভিনব আঙ্গিকে।
|
|
কবি কবিরুল ইসলাম |
‘প্রত্যেকেই নিজ নিজ সূর্য-সন্নিধানে যেতে চায়।/ কেউ কেউ যেতে পারে।/ তাদের বিরল ভাগ্য গুণে/ ঈর্ষা করি। তেমন দাক্ষিণ্য নিয়ে যেহেতু জন্মিনি।’ সিউড়ির বাসিন্দা সদ্য প্রয়াত কবি কবিরুল ইসলাম বহু দিন আগে লিখেছেন ওই কবিতা (প্রত্যেকেই সূর্য সন্নিধানে)। তাঁকে নিয়ে বীরভূম সাহিত্য পরিষদ তাদের নিজস্ব ভবনে গত রবিবার বিকেলে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছিল। কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারণ, তাঁর লেখা কবিতা পাঠ, তাঁকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠের পাশাপাশি কবির শেষের কয়েক বছর একাকীত্ব জীবনযাপনের কথাও আলোচিত হয়। কবির কয়েক জন ঘনিষ্ঠ অনুরাগীর বক্তব্য, “কবির খামখেয়ালি স্বাভাবের জন্য তাঁকে শেষের দিকে অনেকেই এড়িয়ে চলতেন। ফলে তিনি একা হয়ে পড়েছিলেন। তবু তিনি কবি হিসেবে বীরভূমের সম্রাট ছিলেন। এটাই আমাদের গর্ব।”
|
• গত বুধবার রবীন্দ্র সপ্তাহ হয়ে গেল বিশ্বভারতীতে। এই উপলক্ষে শান্তিনিকেতনের লিপিকা অডিটোরিয়ামে ‘রবীন্দ্রনাথ ও স্বামীজি’ শীর্ষক আলোচনা হয়। ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় সংহতি কেন্দ্রের ডিরেক্টর অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন ওই বিষয়ের উপরে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত, রবীন্দ্রভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ স্বপন মজুমদার-সহ বিশিষ্ট রবীন্দ্র অনুরাগীরা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক উদয়নারায়ণ সিংহ। এ ছাড়া সাত দিন ধরে আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
• যুব প্রজন্মের কাছে বিবেকানন্দকে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন। তাই স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন রাজ্য-সহ এ রাজ্যের জেলায় জেলায় বিবেকানন্দ ভাবানুরাগী যুব সমিতি গঠন হয়েছে। রবিবার ওই সমিতির আওতাধীন বীরভূম জেলা সমিতি জেলার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই সঙ্ঘের জেলা সমিতির সভাপতি সবুজকলি সেন বলেন, “প্রবন্ধ, আবৃত্তি-সহ বিভিন্ন বিভাগে জেলা জুড়ে ১৫০ জন প্রতিযোগিতী যোগ দিয়েছিল। সেরাদের নিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতা হবে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী সোমাত্মানন্দ।
• শনি ও রবিবার দু’দিন বোলপুরের গীতাঞ্জলি সংস্কৃতি অঙ্গনে হয়ে গেল নানা অনুষ্ঠান। ‘একপথে’ এই নাট্য উৎসবে রবীন্দ্র কাহিনি অবলম্বনে পরিবেশিত হয়েছে ‘খাতা’ নাটক। এ ছাড়া ছিল গৌড়ীয় নৃত্য, ভারত কথা-র মতো অনুষ্ঠানগুলি।
|
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অযোধ্যা পাহাড়তলিতে মুরগুমা জলাধারের কাছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের উদ্যোগে দিনভর নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল। রানি লোচনকুমারী বিদ্যামন্দির, লক্ষ্মীপুর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। স্থানীয় শিল্পীরা আদিবাসী নৃত্য, পাতানাচ পরিবেশন করেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বড়জোড়ার বিজয়া ময়দানেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আয়োজন করে বড়জোড়া রাজ ক্লাব। দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা পাঠ হয়। দুঃস্থ পড়ুয়াদের বইদান ও কৃতি পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মালিয়াড়া পঞ্চায়েত ও প্রভাকর বিরুণী স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। মালিয়াড়া সন্তোষ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীরা দেশাত্ববোধক গান ও আবৃত্তি করে।
|
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাঁকুড়ার চাতক সাহিত্য গোষ্ঠী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সঙ্গীত ও কবিতা আবৃত্তি করেন স্থানীয় শিল্পীরা। |