১৮ হাজার টপকাতে সূচকের ভরসা সংস্কার
র্থনীতির পিঠ এখন দেওয়ালে। চাকা ঘোরাতে সরকার মরিয়া। কিন্তু বাধাও প্রচুর। প্রস্তাব অনেক, কিন্তু চাকা এগোচ্ছে না। অনেক সংস্কারেই শরিকদের সায় নেই। পাশে নেই বর্ষাও।
এতটা প্রতিকূলতার মধ্যেও এখনই কিছু করা দরকার। না হলে বড় বিপদ। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার যে সব পদক্ষেপের কথা ভাবছে, তার মধ্যে আছে:
• সুদের হার কমানো
• শেয়ার বাজার এবং মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাণ ফেরানো
• সোনা আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আনা
• রফতানি বাড়াতে পদক্ষেপ
• খুচরো ব্যবসা ও বিমান পরিবহণ সংস্থায় বিদেশি লগ্নি
• কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে এমন শিল্প, যেমন বস্ত্র, চর্ম, গয়না, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদির জন্য নতুন প্যাকেজ
• বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে ডিজেলে ভর্তুকি কমানো
• বাজেটে ঘাটতি ছাঁটাই
কিছু ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনও কোনও শরিকের সায় না থাকায় কাজ থমকে থাকছে। ডিজেলের দাম বাড়ানো জরুরি হলেও তা অনেক রাজনৈতিক দলই সহজে মেনে নেবে না। সরকার যে বেশি কঠোর হবে তারও উপায় নেই, কারণ নির্বাচন খুব দূরে নয়। এমন সময়েই প্রকাশিত হয়েছে কয়লা কেলেঙ্কারির দুঃসংবাদ। অর্থাৎ কেন্দ্রের সামনে এখন কঠিন পরীক্ষার সময়।
এমন এক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ আশা প্রকাশ করেছে ২০১১-’১২ সালের ৬.৫ শতাংশের জায়গায় চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার এক চিলতে বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৬.৭ শতাংশে। কৃষিতে এ বার বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে মাত্র ০.৫%। শিল্পে ৪.৫%। মূল্যবৃদ্ধির পরিধি রাখা হয়েছে ৬.৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে। কমিটির পক্ষ থেকে যে সব পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে, তার মধ্যে আছে সোনা আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আনা, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বিমা শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া, বহু ব্র্যান্ড-যুক্ত খুচরো ব্যবসায় সরাসরি বিদেশি লগ্নি অনুমোদন, পরিকাঠামো খাতে খরচ বাড়ানো, লগ্নিকারীদের মনে আস্থা ফেরানোর জন্য অতীত দিন থেকে কার্যকর করা আয়কর আইনে পরিবর্তন পুনর্বিবেচনা করা, ডিজেলের দাম বাড়ানো, সীমিত সংখ্যক (যেমন চারটি) গ্যাস সিলিন্ডারের উপর ভর্তুকি দেওয়া ইত্যাদি।
সুদ কমানোর জন্য জোরদার সওয়াল শুরু করেছে বণিকসভাগুলিও। শিল্প মহলের আশঙ্কা, সুদ এখনই কমানো না -হলে অনেক শিল্পেই উৎপাদন কমবে। চড়া দামের কারণে বহু পণ্যের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বরাত আসছে, ফলে ধুঁকছে বহু কারখানা। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী ব্যবস্খ নেয়, তা দেখার অপেক্ষায় শিল্প মহল। অন্য দিকে, ব্যাঙ্ককর্তাদের কাছে সুদ কমানোর আর্জি জানিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি উল্লেখ করেন, স্টেট ব্যাঙ্ক সম্প্রতি বাড়ি ও গাড়ি ঋণে কিছুটা সুদ হ্রাস করায় ঋণের চাহিদা খানিকটা বেড়েছে, যা প্রত্যক্ষ ভাবে এই দুই শিল্পেকে এবং পরোক্ষ ভাবে আরও অনেক শিল্পকে উৎসাহ জোগাবে।
এ দিকে, পরিকাঠামো শিল্পের উন্নয়নের জন্য শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা রাখা খুব জরুরি। শিল্পে বিনিয়োগ আসে এই পথেই। তেজী ভাব থাকা দরকার মিউচুয়াল ফান্ডেরও। কারণ, এখান থেকেই এক বিরাট লগ্নি প্রবাহিত হয় শেয়ার বাজারে। লগ্নির এই দুই ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে সেবি বেশ কয়েকটি নতুন ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে আছে:
(১) দেশের ১,০০০টি অঞ্চলে অন-লাইনে আইপিও-তে আবেদন করার সুবিধা চালু করা।
(২) সব খুচরো আবেদনকারী যাতে ন্যূনতম শেয়ার পান তার ব্যবস্থা করা।
(৩) বিনিয়োগ উপদেষ্টাদের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়া।
(৪) নতুন ইস্যুতে ন্যূনতম লগ্নির পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করা। বর্তমানে এই মাত্রা ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
(৫) মিউচুয়াল ফান্ডে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত নগদে লগ্নি। এতে করের আওতায় পড়েন না এবং প্যান নেই, এমন অসংখ্য মানুষ মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে পারবেন। ফলে আধা শহর এবং গ্রামাঞ্চলে বাজার বাড়বে মিউচুয়াল ফান্ডের।
(৬) ভুল তথ্য দিয়ে মিউচুয়াল ইউনিট বিক্রি করার প্রয়াসকে ‘লোক ঠকানো’ এবং ‘অসাধু ব্যবসা’ আখ্যা দেওয়া হবে এবং তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।
অর্থনীতির হাল ফেরানোর জন্য একই সঙ্গে সক্রিয় হয়েছে সরকারের বিভিন্ন দফতর, সেবি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। প্রস্তাবের সবই বাস্তবায়িত হতে পারবে এমন সম্ভাবনা কম। সুদ এ বার কমবে এবং সরকার সংস্কারের পথে কিছুটা সফল হলেও হতে পারে, এই আশায় শেয়ার সূচক শক্তি সঞ্চয় করছে। বাস্তবে এগুলি ঘটলে সেনসেক্স ১৮,০০০-এর বাধা অতিক্রম করার সাহস দেখাতে পারে। তবে অনেকটাই নির্ভর করবে সরকার শরিক দলগুলিকে কতটা নিজের প্রস্তাব মানাতে পারে তার উপর। বাজারকে আবার প্রাণচঞ্চল করে তুলতে পারলে তার সুফল বর্তাবে শিল্প, ব্যবসা এবং সামগ্রিক অর্থনীতির উপর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.