গ্রেফতারের পরে ‘মারধর’ দলীয় নেতাকে
পুলিশকে মামলার হুমকি মন্ত্রীর
লীয় নেতাকে গ্রেফতারের পরে মারধরের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দিলেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ক্ষোভ, “পুলিশকে তো কেউ মারধর করার ক্ষমতা দেয়নি। পুলিশ তো বিচার করে না। কাউকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোই পুলিশের কাজ। তারা কাউকে এ ভাবে মারতে পারে না।”
গত শুক্রবার সকালে শহরের তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষকে ম্যান্ডেলা পার্ক থেকে গ্রেফতার করেন বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়। ধৃতের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর পরিবারের দাবি, গ্রেফতার করার সময়ে ও থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশ শিবশঙ্করবাবুকে মারধর করে। তারই জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ সেলে ভর্তি করাতে হয়। পুলিশ অবশ্য ধৃতকে মারধরের কথা অস্বীকার করে। শিবশঙ্করবাবুও শুক্রবার হাসপাতালের চিকিৎসককে দেওয়া বয়ানে মারধরের কথা জানাননি বলে জানা গিয়েছে।
রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শনিবার মন্ত্রী রবিরঞ্জনবাবু ধৃত নেতাকে দেখতে হাসপাতালে যান। তাঁর অভিযোগ, “কেন শিবুকে মারধর করা হয়েছে, তা এসপি-র কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি দাবি করেছেন, মারধর করা হয়নি। অথচ শিবুর কানে চোট লেগেছে। তিনি ভাল করে শুনতে পাচ্ছেন না। এখনও তাঁকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। মারধর না করা হলে এমন হল কী করে।” তাঁর দাবি, “পুলিশের বিরুদ্ধে দরকারে হাইকোর্টে মামলা করব। মানবাধিকার কমিশনেরও দ্বারস্থ হব। বর্ধমান থানার আইসি আইন বহির্ভূত কাজ করেছেন। আগেও তাঁর বিরুদ্ধে আইন হাতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ এই কাজ করতে থাকলে আমি থানার সামনে আমরণ অনশনে বসব।”
শহরে গত কয়েকটি সভায় মন্ত্রী রবিরঞ্জনবাবু পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিলেন। রাজ্যের নতুন সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে টাউন হলে এক সভায় তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, “পুলিশই শহরে অশান্তি ছড়াচ্ছে। এই কাজ করতে দেওয়া হবে না। আমি পুলিশকে করে খেতেও দেব না।” সম্প্রতি শহরের নারকেলবাগানে একটি সভায় তিনি অভিযোগ করেন, “পুলিশের নিরপেক্ষ ভাবে, আইনের পথ ধরে কাজ করা উচিত। কিন্তু কোনও কোনও জায়গায় পুলিশ আমাদের দলের মধ্যে গোলমাল লাগিয়ে দিচ্ছে। এটা পুলিশের কাজ নয়।” শনিবার মন্ত্রীর মন্তব্য, “আমি মনে করি, এই আইসি-র বর্ধমানে থাকার অধিকার নেই। এ ব্যাপারে আমি দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দরবার করব।”
শনিবার দুপুরে দলের নেতা সুশান্ত ঘোষ, পরিতোষ চক্রবর্তী ও শহর যুব তৃণমূল সভাপতি খোকন দাসকে নিয়ে হাসপাতালে যান মন্ত্রী। পরিতোষবাবু ও খোকনবাবুর বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। পুলিশ অবশ্য তাঁদের কাউকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি। মন্ত্রীর বক্তব্য, “ওঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে আমার অন্তত জানা নেই। পুলিশও এ ব্যাপারে আমাকে কিছু বলেনি।”
হাসপাতালের পুলিশ লক-আপ বা পুলিশ সেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে ঢুকেছিলেন কি না, সে প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি একা সেলে ঢুকেছিলাম। পুলিশই আমাকে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। তাই অনুমতি নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে কী করে?”
মন্ত্রী পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের বা দলবাজির অভিযোগ তুললেও, তা মানতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা। তিনি বলেন, “শুক্রবার চিকিৎসকদের দেওয়া বয়ানে ধৃত নিজেই মারধরের কোনও কথা বলেননি। পুলিশ কোনও দল বা গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে না। আমরা নিরপেক্ষই রয়েছি। জানি না, মন্ত্রী কেন ওই অভিযোগ করছেন।” তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, “এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারের পরে যে ভাবে দলের মন্ত্রী-বিধায়কেরা ছুটে আসছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, তাতে তো মনে হচ্ছে, ওই দলের কারও বিরুদ্ধেই কোনও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.