স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কোচবিহারের সিতাই থানার চামটা এলাকা। তির-ধনুক, লাঠিসোটা, বল্লম, ইট-পাথর নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ফরওয়ার্ড ব্লক এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। আহত হন দু’পক্ষের জনা ষাটেক। তাঁদের মধ্যে এক তৃণমূল কর্মীর ডান হাতে তির বিঁধেছে। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে এক ফব কর্মীর। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে তিন রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে। ঘটনার জন্য একে অন্যের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ফব ও তৃণমূল।
জেলার পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “স্কুল নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল করা নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে। এলাকায় বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।”
আগামী ২৬ অগস্ট সিতাইয়ের চামটা আদর্শ হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধিদের ৬টি আসনে নির্বাচন হবে। স্কুলের পরিচালন সমিতি গত ২৫ বছর ধরে ফব-র দখলে। এ দিন ছিল সেই নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে দুই শিবিরের প্রার্থীরাই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য স্কুল লাগোয়া এলাকায় জড়ো হন। ছিলেন দু’দলের কর্মী-সমর্থকেরাও। মনোনয়ন দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হতেই প্রথমে দু’পক্ষে বচসা, পরে সংঘর্ষ বাধে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
ফব-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহর অভিযোগ, “তৃণমূল সমর্থকেরা পরিকল্পিত ভাবে আমাদের প্রার্থীদের উপরে হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাদের কর্মীদের কোপানো হয়েছে।” ওই ঘটনার জেরে চামটা ও শেওড়াতলায় তাদের কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ফব-র। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত থাকা ফব কর্মী সুদাম বর্মনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পক্ষান্তরে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অভিযোগ, “কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লকের সাংসদ নৃপেণ রায়ের নেতৃত্বে তিরন্দাজ বাহিনীর হামলায় আমাদের অন্তত ৪০ জন হামলায় জখম হয়েছেন।” তিরবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী জীবন দাসকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাংসদ নৃপেণবাবু বলেন, “ভোটে হারের ভয়ে তৃণমূলই বহিরাগতদের এনে তাণ্ডব চালিয়েছে।” স্কুল সূত্রের খবর, গণ্ডগোল হলেও দু’দলের ছ’জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। |