তাঁর বাংলোর সামনেই মণ্ডপ। সেখানে দু-দিন ধরে দিনভর মাইক বেজেছে তারস্বরে। বৃহস্পতিবার রাতেও তা না থামায় কৃষ্ণনগর থানায় টেলিফোন করে অভিযোগ করে তাঁকে শুনতে হয়েছিল, ‘‘ওরা তো জেলাশাসকের অনুমতি নিয়েই মাইক বাজাচ্ছে। পুলিশ কী করবে?’’
তিনি ইয়াসমিন ফতেমা। কৃষ্ণনগর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের (তৃতীয়) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক। ক্ষুব্ধ বিচারক শনিবার, নদিয়া জেলা পুলিশ সুপার ও কৃষ্ণনগরের মহকুমাশাসককে এ ব্যাপারে তাঁর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন ‘‘সারারাত বাংলোর সামনে মাইকের তাণ্ডব চলেছে। বাধ্য হয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে থানায় ফোন করায় ডিউটি অফিসার আমাকে জানান, উদ্যোক্তারা নাকি জেলাশাসকের অনুমতি নিয়েই মাইক বাজাচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে জেলাশাসক এমন কোন অনুমতি দেননি।’’ তাঁর বিস্ময়, বিচারকের কথায় পুলিশ যদি এমন দায়িত্ব ‘এড়িয়ে’ যায় তাহলে সাধারণ মানুষের কথা কি ‘আদৌ কানে তুলবে’ পুলিশ!
নদিয়ার জেলাশাসক অভিনব চন্দ্রা অবশ্য স্পষ্টই জানিয়েছেন, বিচারকের বাংলোর সামনে এমন কোনও অনুমোদনই তিনি দেননি। তিনি বলেন, “এমন কোনও অনুমতিই আমি দিইনি। কারা আমার নাম করেছে এবং ঠিক কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলেছি। এ ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।”
নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র শনিবার জানান, বিচারকের লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কী কথা বলা হয়েছে? তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কিন্তু কী সেই ‘ব্যবস্থা’? তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দিন কয়েক আগেই কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের এক বিচারকের আবাসন থেকে দিনের বেলাতেই খোয়া গিয়েছিল আস্ত একটি টেলিভিশন সেট। সে ব্যাপারে পুলিশের গাফিলতি থাকলে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া আশ্বাস দিয়েছিলেন পুলিশ সুপার। দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সে ব্যাপারে এগোতে পারেনি পুলিশ। এ বার, বিচারকের টেলিফোন পেয়েও গাত্রোত্থান করেনি পুলিশ। এখন দেখার কী ‘ব্যবস্থা’ নেন পুলিশ সুপার। |