উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এবং তাঁর সমর্থকদের আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণ মিলল আজ। অ্যাসাঞ্জ এবং তাঁর সমর্থকেরা এত দিন বলে আসছিলেন, অ্যাসাঞ্জকে প্রথমে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে আমেরিকার হাতেই তুলে দেওয়া হবে। অ্যাসাঞ্জের নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়া আজ জানিয়ে দিল, অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকায় ‘সম্ভাব্য প্রত্যর্পণের’ জন্য প্রয়োজনীয় নথি তৈরি করছে ওয়াশিংটনে অস্ট্রেলীয় দূতাবাস। অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ক্রেগ এমারসন আজ এ কথা জানিয়েছেন। তবে, ওয়াশিংটন তা এখনই চাইছে কি না, সে সম্পর্কে তাঁর হাতে কোনও তথ্য নেই বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ব্রিটেনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’দেশের মধ্যে চাপানউতোর প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এরই মধ্যে ইকুয়েডরের উপর আরও চাপ বাড়িয়ে ওয়াশিংটন এ দিনই জানিয়ে দিয়েছে, ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়ার নীতিকে তারা সমর্থন করে না। মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র জানান, ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়াকে আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না আমেরিকা। |
এরই মধ্যে অ্যাসাঞ্জকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়া নিয়ে সুইডেনের বিদেশমন্ত্রী কার্ল বিলডেট আজ ইকুয়েডরের বিদেশমন্ত্রীকে এক হাত নিলেন। তিনি বলেন, ওঁরা ‘কল্পনার জগতে’ বাস করছেন। তাঁর বক্তব্য, “অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সুইডেনের আদালতে যৌন নির্যাতনের নির্দিষ্ট অভিযোগ এনেছেন দু’জন মহিলা। আইনজীবীরা অ্যাসাঞ্জকে এ নিয়ে প্রশ্ন করতে চান। তাঁরা জানতে চান ঠিক কী হয়েছিল।” এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটেন যখন তাঁদের সাহায্য করছে, তখন ইকুয়েডর কেন অ্যাসাঞ্জকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়ার মতো ‘অবাস্তব’ সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর আরও প্রশ্ন, যে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে উঠেছে, তা যদি মিথ্যাই হয়, তবে কেন তিনি ন্যায় বিচারকে ভয় পাচ্ছেন?
পাশাপাশি, উইকিলিকসের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার ইকুয়েডরের দূতাবাসের সামনে থেকে সরাসরি বক্তৃতা দেবেন অ্যাসাঞ্জ। কিন্তু দূতাবাসের বাইরে পা রাখলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই পরিস্থিতিতে, ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী উইলিয়াম হগ কিন্তু ফের জানিয়েছেন অ্যাসাঞ্জকে ইকুয়েডরে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। কারণ, সুইডেনে প্রত্যর্পণের জন্য উইকিলিকস প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এর পাল্টা হিসেবে, অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে ইকুয়েডরে যেতে দেওয়া না হলে রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক আদালতে ব্রিটেনের বিরুদ্ধেই মামলা করা হবে। |