কেটে গিয়েছে প্রায় ১২ বছর। রাজ্যে বদল হয়েছে সরকারের। কিন্তু কলকাতা পুলিশের প্রায় ৭৫০ জন কনস্টেবলের পদোন্নতির সিদ্ধান্ত এখনও কার্যকর হয়নি। এই অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে আর তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হল। তার মধ্যে ওই ৭৫০ কনস্টেবলকে প্রোমোশন দিতেই হবে। নইলে আদালত অবমাননার দায়ে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে।
কলকাতা পুলিশ ২০০০ সালে ১৫০০ কনস্টেবলকে হেড কনস্টেবলের পদে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ৮২৩ জনকে হেড কনস্টেবলের পদ দেওয়াও হয়। কিন্তু তার পরেই রাজ্যের তৎকালীন সরকার হেড কনস্টেবল পদটিরই বিলোপ ঘটায়। পদ তুলে দেওয়ার সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু কনস্টেবল হাইকোর্টে মামলা করেন। হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে ৭৫০ কনস্টেবলের পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার তখন ঠিক করে, হেড কনস্টেবলের পরিবর্তে ওই কনস্টেবলদের উন্নীত করা হবে এএসআই (আনার্মড)-এর পদে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তও কার্যকর হয়নি। অগত্যা আবেদনকারীরা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করেন।
আদালত অবমাননার দায়ে পুলিশ কমিশনারকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। পুলিশ কমিশনার রঞ্জিত পচনন্দা এ দিন হাইকোর্টে হাজির হয়ে জানান, কলকাতা পুলিশের প্রায় ৭৫০ জন কনস্টেবলের পদোন্নতির সিদ্ধান্ত রূপায়ণের দায়িত্ব রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের। এই ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের কোনও দায়িত্ব বা এক্তিয়ার নেই। স্বরাষ্ট্র দফতরের জন্যই তা আটকে রয়েছে বলে আদালতে জানান তিনি।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, তিনি কলকাতা পুলিশের লিখিত বক্তব্য থেকে জানতে পেরেছেন, এই বিষয়ে তাদের যা করণীয়, ইতিমধ্যেই তারা তা করেছে। এখন কাজ করতে হবে স্বরাষ্ট্র দফতরকে। তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে তিন সপ্তাহ সময় দেয়। ওই সময়ের মধ্যে কনস্টেবলদের পদোন্নতির কাজ শেষ করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, পদোন্নতি পর্ব যথাসময়ে সাঙ্গ হল কি না, ২১ দিন পরে তা জানাতে হবে হাইকোর্টে। সেই সঙ্গেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, পুলিশ কমিশনারকে আর হাইকোর্টে হাজির হতে হবে না। বরং ঠিক সময়ে কাজ না-হলে স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করা হবে উচ্চ আদালতে। |