|
|
|
|
উন্নয়নে গতি আনতে বৈঠক পশ্চিমে |
বিডিও-ই ‘সর্বময় কর্তা’, বার্তা দিলেন জেলাশাসক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বিডিওদের অজুহাত খাঁড়া না করে কাজ করে যাওয়ার কথা বললেন জেলাশাসক। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সার্কিট হাউসে জেলার বিডিওদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘কোনও বাহানা নয়। কাজ চাই। তার জন্য যা প্রয়োজন তা-ই করতে হবে।’’ কড়া হাতে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে গিয়ে যদি বিডিওদের সমস্যায় পড়তে হয়, সেক্ষেত্রে নিজে দাঁড়িয়ে সমস্যার সমাধান করবেন
বলেও আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবল নিজের দফতর নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি থেকে প্রতিটি দফতরের কাজ দেখতে বলা হয়েছে বিডিওদের। এমনকী কোনও দফতর যদি ঠিক ভাবে কাজ না করে তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেই দফতরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জানাতে বলা হয়েছে বিডিওদের।
কিন্তু হঠাৎ এই নির্দেশ কেন?
মুখ্যমন্ত্রী ৮ অগস্ট ঝাড়গ্রাম সফরে এসে বিডিওদের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তারপরেই জেলাশাসক বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেন। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ঠিক ৬ দিনের মাথায় বৈঠক হয়। সেখানে ব্লকের ‘সর্বময় কর্তা’ হিসাবে বিডিওদের কাজ করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, “কাজ করতে হবে। দ্রুত উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তার জন্য বিডিওদের সব ধরনের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচি সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছে যায় সেগুলি দ্রুত বাস্তবায়িত করার উপরে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বৈঠকে। তার মধ্যে রয়েছে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, রেশন, রাসায়নিক সার, ভাতা চিকিৎসা ইত্যাদি। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টি দেখে কৃষি দফতর ও ব্যাঙ্ক। কোথাও সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কার্ড দেওয়া হয়। আবার কিছু কৃষি দফতর তালিকা তৈরি করে দেয়। সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যাঙ্ক কার্ড বিতরণ করে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে কার্ড বিতরণ করতে কৃষি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ও ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের নিয়ে বিডিও বৈঠক করবেন। এমনকী কৃষি দফতর তালিকা তৈরি করতে দেরি করলে, বা তালিকা তৈরির পর ব্যাঙ্ক কার্ড দিতে দেরি করলে ব্যাঙ্কের বা কৃষি দফতরের বিরুদ্ধে উধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বিডিও। এ ছাড়া সার বিক্রেতারা বেশি দামে সার বিক্রি করছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে কৃষি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে দোকানে দোকানে তল্লাশিও করবেন তিনি। হঠাৎ ঢুঁ মারবেন হাসপাতালে। দেখবেন রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছে কিনা কিংবা হাসপাতালের কী প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা নিয়মিত আসছেন কিনা, সঠিক খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা, স্কুলে মিড ডে মিল চলছে কিনা, খাবারের মান কেমনএ সবই দেখবেন বিডিও। সেচ, পানীয় জল, রাস্তা থেকে শুরু করে যে সব উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে তা সঠিক ভাবে রূপায়িত হচ্ছে
কিনা তাও দেখতে হবে। সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা। প্রতিটি কাজেই বিডিও শুধু হস্তক্ষেপ করবেন তা নয়, রীতিমতো নজরদারি করবেন। প্রয়োজনে জবাবদিহিও করবেন। এবং সঠিক জবাব না পাওয়া গেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, এতদিন অন্য দফতরের কাজ দেখার জন্য মাঝে মধ্যেই ব্লক মনিটরিং কমিটির বৈঠক হত। সেখানে বিভিন্ন দফতর নিজেদের মতো যুক্তি খাঁড়া করতেন। বিডিওরাও ততটা মাথা ঘামাতেন না। ফলে উন্নয়নের কাজ আটকে থাকত। তাই এ বার কেবল বৈঠক আর রিপোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা নয়, বিডিও-দের প্রতিটি কাজ দেখে, নিজের দায়িত্বে করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক। প্রশাসন সূত্রে খবর, সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী এই পথে চলার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসককে। আর নির্দেশ মেনেই জেলাশাসকের এই কড়া পদক্ষেপ। |
|
|
|
|
|