সেই রং-তুলিতে পোস্টার, কৌটোয় চাঁদা
‘পুরনো’ দিনেই ফিরছে ডিওয়াইএফ
‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে মানুষের কাছে পৌঁছতে রং-তুলিতে লেখা পোস্টারে ফিরছে ডিওয়াইএফ। এ বার থেকে পুরনো সেই হাতে লেখা পোস্টারের দেখা মিলবে পাড়ায় পাড়ায়। রাস্তার মোড়ের এদিক-সেদিকে। সঙ্গে কৌটোতে অর্থ সংগ্রহ করতেও দেখা যাবে যুবকর্মীদের। সব মিলিয়ে সংগঠনকে ‘পুরনো’ চেহারায় ফেরাতে ‘অতি-তৎপর’ যুব নেতৃত্ব। এমনটাই ঠিক হয়েছে মেদিনীপুরে সদ্য সমাপ্ত ডিওয়াইএফ-এর জেলা সম্মেলনে।
একটা সময় ছিল, যখন রং-তুলিতে লেখা পোস্টারই ছিল ভরসা। কোনও ইস্যুতে জনমত সংগঠিত করতে হলে যুবকর্মীরা পোস্টার লিখে দেওয়ালে সাঁটাতেন। খালি গলায় স্লোগান তুলে মিছিলে হাঁটতেন একসাথে। দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার ফলে এ সব ‘অতীত’ হয়ে গিয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে হাতে লেখা পোস্টারের সংখ্যা কমে এসেছে। সেই জায়গায় এসেছে মেশিনে ছাপানো ফ্লেক্স-পোস্টার। অনেক জায়গায় ক্যাসেটে বক্তব্য রেকর্ডিং করেও চালানো হত। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে পালাবদলের পরে ‘পুরনো’ দিনে ফেরার চেষ্টা চলছে দলে।
ঠিক কী কী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে সম্মেলনে?
এক, সংগঠনের কেন্দ্রগুলিতে এ বার রং, তুলি, কাগজ, ফ্ল্যাগ ও ফেস্টুন রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। দুই, ডাকলেই পাওয়া যাবে, এমন কর্মীদের ফোন নম্বর খাতায় লিখে রাখতে হবে। তিন, দু’-তিনটি ডেকরেটরের সঙ্গে কথা বলে রাখতে হবে। যাতে চাইলে মাইক পাওয়া যায়। সঙ্গে তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখতে হবে। চার, কম সংখ্যক উপস্থিতি হলেও মিছিল বা পথসভা সংগঠিত করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে মাইক ছাড়াই মিছিল হবে। পাঁচ, সর্বত্র অন্তত কিছু হাতে লেখা পোস্টার চোখে পড়ার মতো জায়গায় সাঁটতে হবে। যাতে তা পথচলতি মানুষের নজরে পড়ে। ছয়, হাতে লেখা পোস্টার-দেওয়াল লেখার অভ্যাসের ধারাবাহিকতা প্রাথমিক কমিটি পর্যন্ত সম্প্রসারিত করতে হবে। সঙ্গে বছরে অন্তত ৪ বার কৌটোতে অর্থ সংগ্রহ করার উপরও জোর দিতে বলা হয়েছে।
কেন এই ‘পুরনো’ দিনে ফেরার চেষ্টা?
ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “এখনও হাতে লেখা পোস্টারের চল রয়েছে। তবে এটা ঠিকই, সংখ্যাটা কমে গিয়েছে। সেই জায়গায় মেশিনে ছাপানো ফ্লেক্স-পোস্টার এসেছে। হাতে লেখা পোস্টার তৈরির চল আবার ফিরে এলে, বিভিন্ন ইস্যুতে পাড়ায় পাড়ায় মিছিল সংগঠিত হলে যুব কর্মীদের আরও সক্রিয় করা যাবে।” তাঁর বক্তব্য, “রাজ্যে-দেশে-বিদেশে নানা ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটছে যা যুবসমাজ-সহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করে। এদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে না-পারলে সংগঠনের ভিত মজবুত করা কঠিন।”
ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, “প্রচার একটি লড়াই। এই লড়াই আমাদের সংগঠনের সঙ্গে আমাদের শত্রুদের নয়। আসলে লড়াইটা শত্রুদের সঙ্গে সাধারণ যুবদের। আমরা এই লড়াইয়ে সাধারণ যুব সমাজের প্রতিনিধি।” এ ক্ষেত্রে সংগঠনের নির্দেশইস্যু বাছাই করে, ধারাবাহিকতা রক্ষা করে, নিবিড় প্রচার করতে হবে। মানুষের মনে দাগ কাটবে, এমন স্লোগান তৈরি করতে হবে। শত্রুর বিরুদ্ধে প্রচার হবে আক্রমণাত্মক। নেতৃত্বের বক্তব্য হবে আবেদনমূলক। প্রচার হবে তথ্য ভিত্তিক। যুক্তিনিষ্ঠ। ভাষা হবে আকর্ষণীয় ও সহজ-সরল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরও বেশি করে বিভিন্ন ক্লাব-সহ সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যুক্ত করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করারও নির্দেশ দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব।
এ ভাবে কী সংগঠনের ‘হাল’ ফেরানো যাবে?
উত্তর দেবে সেই সময়ই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.