|
|
|
|
ক্ষোভে ফেটে পড়লেন সৌরাশিস, সঞ্জীব |
পাঁচ সিনিয়রকে ছেঁটে বিতর্কে নির্বাচকরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বাংলার রঞ্জি মরসুম শুরু হওয়ার আগেই তুমুল অশান্তি বেঁধে গেল প্রাথমিক দল নির্বাচন নিয়ে। পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারকে ৩২ জনের প্রাথমিক দলের বাইরে রেখে রাতারাতি তুমুল বিতর্কের মুখে দীপ দাশগুপ্তের নেতৃত্বাধীন বাংলার নির্বাচক কমিটি।
অরিন্দম দাস, সৌরাশিস লাহিড়ি, সঞ্জীব সান্যাল, রণদেব বসু এবং শিবশঙ্কর পালএই পাঁচ জনকে প্রাথমিক দলে রাখা হয়নি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম প্রাথমিক তালিকায় নেই, তবে তিনি রঞ্জি খেলতে চাইলে ‘অটোমেটিক চয়েস’। কিন্তু বাদ পড়া পাঁচ ক্রিকেটারের অধিকাংশই ক্ষোভে ফেটে পড়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিলেন নির্বাচন নীতি নিয়ে। ক্রিকেটারদের সাফ কথাক্লাবের পারফরম্যান্সের বদলে নির্বাচকদের খামখেয়ালিপনার ভিত্তিতেই যদি দল নির্বাচন হয়, তা হলে ক্লাব ক্রিকেট বন্ধ করে দেওয়া উচিত!
গত বছরও দীপ দাশগুপ্তের নির্বাচন কমিটির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল গণ্ডগোল বেঁধেছিল। এ বারও নানা রকম যুক্তি উঠে আসছে। সিএবি এবং নির্বাচক কমিটির যুক্তিগুলো এ রকম:
অরিন্দম দাস: প্রচুর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সারা মরসুমে একটা-দু’টো সেঞ্চুরি ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না।
সৌরাশিস লাহিড়ি: স্পিনার হিসেবে তাঁর থেকে আর কিছু পাওয়ার নেই। উইকেট পান না। ব্যাটের হাত ভাল, কিন্তু তাতে লাভ নেই।
সঞ্জীব স্যান্যাল: ওয়ান ডে-তে বেশ ভাল অলরাউন্ডার। কিন্তু চার দিনের ক্রিকেটে এই মুহূর্তে ভাবা যাচ্ছে না। ওয়ান ডে স্পেশ্যালিস্ট হিসেবে ব্যাখ্যা দিলেও গত বার সঞ্জীবকে বিজয় হাজারে-তে খেলানো হয় দু’টি ম্যাচ। উইকেট ছ’টা। এক নির্বাচক জানালেন, রামনের তাঁকে পছন্দ নয়। তাই নেই। |
|
দীপ দাশগুপ্ত: তোপের মুখে বাংলার প্রধান নির্বাচক |
রণদেব বসু ও শিবশঙ্কর পাল: রণ ফর্ম হারিয়েছেন। আর শিব গত মরসুমে ক্লাব ক্রিকেটে ভাল বল করলেও আগের মতো ভয়ঙ্কর নন।
সিএবি-র যুগ্ম সচিব সুজন মুখোপাধ্যায় বলছেন, “আমাদের এ বার রঞ্জি চাই। সে ভাবেই টিম করা হয়েছে।” দীপ বললেন, “ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রাথমিক দল হয়েছে।” যা হাস্যকর ঠেকছে সিএবি-র একটা প্রভাবশালী মহলের কাছেই। বলা হচ্ছে, যে টিম রঞ্জি জয়ের জন্য নামবে, যেখানে অরিন্দমকে রাখা নিয়ে এত সমস্যা, সেখানে অভিষেক ঝুনঝুনওয়ালা কী করছেন? গত রঞ্জি মরসুমে গড় তো ১৩!
পুরো ঘটনাপ্রবাহ দেখে ক্রিকেটাররাও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। সৌরাশিস লাহিড়ি বলছেন, “একটা মরসুম দেখেই সব ঠিক করে ফেলা হচ্ছে? আর আমাকে তো ক্লাব ক্রিকেট খেলতে বলা হল। সেখানে পঞ্চাশটা উইকেট পেয়েছি। ছ’শোর কাছাকাছি রান। আর রঞ্জিতেও আমার ২২২-টা উইকেট আছে। আর বাকি স্পিনাররা কী করছে?” আরও ঝাঁঝালো শোনাচ্ছে সঞ্জীবের গলা। “রামন সারা বছর কী ভাবে ম্যাচ জেতাচ্ছি সেটা দেখতে আসেন? আর জুনিয়ররা ক’টা ক্লাব ম্যাচ জেতায়? শুনুন, এই নির্বাচন আমি মানি না। পারলে এই জুনিয়ররা আমার সঙ্গে লড়ে দেখাক।”
সৌরাশিস-সঞ্জীবের ক্ষোভ শিবশঙ্করের গলাতেও। বলে দিলেন, “ক্লাব ক্রিকেটটাই তুলে দেওয়া উচিত। গত দু’বছর কিছু বলিনি। কিন্তু এ বার ফিট ছিলাম। মরসুমে ৪৭টা উইকেট আছে। কিন্তু তাতে লাভ কী হল?” রণদেব অবশ্য কিছু বলেননি। অরিন্দম এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে বলে দিলেন, “খবরটা শুনে কী বলা উচিত জানি না। আমার মাথায় কিছু আসছে না।” যা দাঁড়াচ্ছে, ক্রিকেটারদের এই সম্মিলিত বিস্ফোরণের পর রীতিমতো চাপে নির্বাচক কমিটি। বছর তিনেক আগে প্রাথমিক দল ঘোষণা করেও পরে তা বদলানোর নজির আছে। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। |
|
|
|
|
|