|
|
|
|
মাথায় হাত দরিদ্র পরিবারের |
র্যাফ নামিয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোঘাট |
রাত তখন প্রায় ১১টা। ‘বর’ বরণ হয়ে গিয়েছে। ‘বরযাত্রীরা’ও চেটেপুটে ভোজ খেয়েছেন। বিয়ের মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে হবে। হঠাৎই পুলিশ-র্যাফে ছেয়ে গেল বিয়ে বাড়ি। নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিলেন আরামবাগের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট শান্তিরাম ঘোড়ুই। মেয়ের জন্মের শংসাপত্র দেখতে চাইলেন তিনি। দেখা গেল, ‘কনে’র বয়স ১৪ বছর ২ মাস। মেয়ের বাবার মাথায় হাত পড়লেও বিয়ে বন্ধ হয়েছে।
রবিবার ঘটনাস্থল গোঘাটের গোস্বামীপাড়া। দিনমজুর দম্পতির মেয়েটির বিয়ের কথা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার পাত্রের সঙ্গে। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ খবর আসে, নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দিই। গোলমালের আশঙ্কা থাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অবশেষে রাত দেড়টা নাগাদ দু’পক্ষকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বেআইনি বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে।”
এ দিকে গোটা পরিস্থিতিতে শোকগ্রস্ত মেয়ের পরিবার। মেয়ের বাবার কথায়, “আমরা পড়াশোনা জানি না। বিয়ের বয়স-টয়স নিয়ে ভাবিনি। সোনা-দানা সর্বস্ব বন্ধক দিয়ে, কার্যত লোকের কাছে হাত পেতে কোনও রকমে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলাম। এক রাতেই ৪০ হাজার টাকা জলে গেল। সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।” তাঁর অভিযোগ, বিয়ের দু’এক দিন আগেও যদি প্রশাসনের লোকজন এসে বলতেন, তা হলে এতটা বিপত্তি হত না। মেয়ের মায়ের আশঙ্কা, “চার বছর পরে মেয়ে সাবালিকা হলে তখন কি আর এত টাকা-পয়সা জোগাড় করার সামর্থ্য থাকবে আমাদের? প্রশাসন কি সে সময়ে পাশে দাঁড়াবে?” মেয়ের মায়ের এই প্রশ্নের জবাব অবশ্য ছিল না প্রশাসনের কর্তাদের কাছে। মহকুমাশাসকের কথায়, “বিপিএল তালিকাভুক্ত ওই পরিবারের মেয়েটি যদি পড়াশোনা করতে চায়, তবে প্রশাসন সেই দায়িত্ব নেবে। সরকারি সাহায্যগুলি ওঁরা যাতে পান, সে দিকটাও দেখা হবে। তবে অল্পবয়সে বিয়ের এই প্রবণতাকে রুখতে কড়া পদক্ষেপ জারি রাখবে প্রশাসন।”
অন্য দিকে, ছেলের বাবা বলেন, “প্রশাসন যখন এ বিয়ে চাইছে না, তখন মেয়ের বাবার দেওয়া জিনিসপত্র ফেরত পাঠিয়ে দেব।” |
|
|
|
|
|