উলুবেড়িয়ায় রহস্য-মৃত্যু
অভিযোগ ‘নেয়নি’ থানা, ক্ষোভ বধূর পরিবারের
ত্মীয় আর পুলিশের ‘চাপান-উতোরে’ আটকে গেল অভিযোগ। উলুবেড়িয়ার নাজিরা বেগমের ‘রহস্য-মৃত্যু’ নিয়ে সোমবার পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়ল না পুলিশের কাছে।
উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ায় যে নার্সিংহোমে ছেলেকে ভর্তি করিয়েছিলেন, সেই নার্সিংহোমের পাশের বাড়ির ছাদ থেকে রবিবার বিকেলে মেলে পাঁচলার রাজখোলা গ্রামের বধূ নাজিরার (২০) দেহ। পুলিশ দাবি করে, মৃতার পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের না করায় তদন্ত শুরু করা যাচ্ছে না। আর বধূটির পরিবারের ক্ষোভ, এ দিন সকালেই তারা উলুবেড়িয়া থানায় ঘটনার তদন্ত চেয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল। সেই সময় পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়। এমনকী, নাজিরার স্বামী শেখ সালামকে একপ্রস্ত ‘হুমকি’ও দেওয়া হয়।
ঘটনা জেনে পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ভরতলাল মিনা বলেন, “এমন হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে বধূটির পরিবার সরাসরি থানার আইসি-র সঙ্গে কথা বলতে পারতেন।” তিনি জানান, আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
১০ অগস্ট নার্সিংহোমে সদ্যোজাত ছেলেকে ভর্তি করান নাজিরা এবং সালাম। রবিবার বিকেলে নাজিরার দেহ চার তলা ওই নার্সিংহোমের ঠিক পাশেই (ফুট দু’য়েকের ব্যবধানে) একটি দোতলা বাড়ির ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই বাড়ির ছাদে যেখানে নাজিরার দেহ মিলেছে, নার্সিংহোমের প্রান্ত থেকে তার দূরত্ব অন্তত ২০ ফুট। ঘটনা দেখে এলাকাবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন, বধূটি স্রেফ লাফ দিলে, কী ভাবে তাঁর দেহ অত দূরে পাওয়া গেল! নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অবশ্য ঘটনায় তাঁদের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন। সেই ‘ধন্দ’ তো বটেই, গোটা ঘটনাটা নিয়েই অনেক প্রশ্ন রয়েছে সালামের। তাঁর বক্তব্য, “আমার স্ত্রী খামোখা আত্মহত্যা করতে যাবেন কেন? আমার অনুমান, ছেলের জন্য ডাক্তার ডাকতে উনি যখন নার্সিংহোমের দোতলায় উঠেছিলেন, সে সময় কোনও একটা কাণ্ড ঘটেছে। হয়তো ওঁর সম্মান নিয়ে টানাটানি হয়েছিল! হয়তো কে বা কারা ওঁকে ফেলে দিয়েছে! সে জন্যই থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে।” তাঁর ক্ষোভ, “উলুবেড়িয়া থানা আমার অভিযোগ নেয়নি। উল্টে আমাকে প্রায় হুমকির সুরে বলা হয়, ‘স্ত্রী-র সঙ্গে ঝগড়া করেছ। সেই কারণে সে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। তোমাকেই হাজতে পুরে দেব’। একটা কথাও সত্যি নয়।”
সালামের সঙ্গে থানায় গিয়েছিলেন তাঁর শ্বশুর আমতার রসপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ নিয়ামত আলি। তিনিও বলেন, “জামাইকে হুমকি দিচ্ছে দেখে আমি পুলিশকে বলি, ‘চার বছর হল আমার মেয়ে নাজিরার বিয়ে হয়েছে। কোনও দিন সালাম নাজিরাকে নির্যাতন করেনি। সালামের বিরুদ্ধে যখন আমারই কোনও অভিযোগ নেই, আপনারা সে প্রসঙ্গ তুলছেন কেন’? সে কথা শুনে আমাদের চলে যেতে বলা হয়।” সালামের বন্ধু শেখ কলিমউল্লাহ বলেন, “উলুবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে নাজিরার দেহ নিয়ে শেষকৃত্য করার তাড়া ছিল। তাই থানা থেকে এ দিন আমরা ফিরে আসি।” জানাজানি হতে ‘নড়াচড়া’ শুরু হয় পুলিশ মহলে। এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) শ্যামলকুমার সামন্ত বলেন, “রবিবার বিকেলেই থানাকে বলা হয়েছে, বধূটির পরিবার এলেই অভিযোগ নিয়ে নিতে।” উলুবেড়িয়া থানার আইসি পার্থরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “বধূটির পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়। ওঁরা বলেছিলেন, নিজেদের মধ্যে কথা বলে সন্ধ্যায় অভিযোগ দেবেন। আমরা ওঁদেরই অপেক্ষায় ছিলাম। ওঁরা আসেননি।” পুলিশ সুপারের (গ্রামীণ) বক্তব্য, “তেমন হলে, নাজিরা বেগমের পরিবার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকেও অভিযোগ জমা দিতে পারেন।”
আজ, মঙ্গলবার ফের উলুবেড়িয়া থানায় যাবেন বলে জানিয়েছেন নাজিরার স্বামী এবং বাবা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.