সিঙ্গুর আইন ‘উল্লেখযোগ্য’, মত রাজ্যপালের
লকাতা হাইকোর্ট যে সিঙ্গুর আইনকে ‘অসাংবিধানিক ও অবৈধ’ আখ্যা দিয়েছে, তাকে ‘উল্লেখযোগ্য আইন’ বলে অভিহিত করলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণে রাজ্যপাল বলেন, “এই বিধানসভা থেকেই ২ হাজার ২৩২টি বিল আইনে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য, ভূমি ও ভূমিসংস্কার, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, শ্রমিক কল্যাণ, সংখ্যালঘু বিষয়ক, সিঙ্গুর এবং জিটিএ আইন উল্লেখযোগ্য।”
রাজ্যপালের ভাষণের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্য সরকারের সাফল্য বর্ণনা প্রসঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি সিঙ্গুর বিলের কথা উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, “আমরা এক বছর তিন মাস কাজ করছি। খুব কম সময়। এর মধ্যেই অনেক বিল পাশ করিয়েছি। যেমন মহিলাদের জন্য পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ, ওবিসি তালিকায় সংখ্যালঘুদের জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয় বিল। সিঙ্গুর অধিগ্রহণ বিলও পাশ হয়েছে। এ ছাড়া, নতুন করে কাজী নজরুল এবং পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হচ্ছে।”
সিঙ্গুরের আইনকে কলকাতা হাইকোর্ট ‘অসাংবিধানিক ও অবৈধ’ বলে রায় দেওয়ার পর ওই আইন নিয়ে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের ‘মতান্তর’ প্রকাশ্যে এসেছিল। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, সিঙ্গুর বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও তা নেওয়া হয়নি। এর পরেই রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, ওই বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর জরুরি নয় বলেই তাঁকে আইনি পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সিঙ্গুর মামলার রায় বিরুদ্ধে যাওয়ায় রাজ্য সরকার তখন এমনিতেই ‘অস্বস্তি’তে। রাজ্যপালের ওই মন্তব্য তাদের ‘বিড়ম্বনা’ বাড়িয়ে দেয়। সরকার তথা প্রধান শাসকদল তাঁর উপর ‘ক্ষুন্ন’ও হয়। রাজ্যপালের এদিনের মন্তব্য সরকারকে খানিকটা ‘স্বস্তি’ দেবে বলেই রাজ্য প্রশাসনের একাংশের অভিমত।
সিঙ্গুরের ৯৯৭.১১ একর জমি ন্যানো কারখানা তৈরির জন্য জন্য টাটাদের ‘লিজ’ দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। তা নিয়ে বাম সরকারের বিরুদ্ধে ‘জোর করে’ কৃষকদের জমি কাড়ার অভিযোগ ওঠে। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের জমি ফেরতের দাবিতে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করেন। প্রত্যাশিত ভাবেই গত বছর তিনি ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সিঙ্গুরের ৪০০ একর জমি ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জমি ফেরত দিতে একটি অর্ডিন্যান্স করে রাজ্য সরকার। তা নিয়ে ‘জটিলতা’ হওয়ায় রাজ্য সরকার আইন তৈরি করে। তার নাম ‘সিঙ্গুর জমি পুনর্বাসন ও উন্নয়ন আইন ২০১১’। ওই আইনের বলেই রাজ্য সরকার টাটাদের হাতে থাকা সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু জুন মাসে সিঙ্গুর আইনকে ‘অসাংবিধানিক এবং অবৈধ’ বলে রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তাদের বক্তব্য, ওই আইনের অন্তত তিনটি ধারা জমি অধিগ্রহণের কেন্দ্রীয় আইনের সঙ্গে ‘সঙ্ঘাতপূর্ণ’। সেই আইনকেই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের ‘উল্লেখযোগ্য’ আখ্যা দেওয়া যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.