চিরাংয়ে ফের হিংসা
সনিয়াকে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন শরণার্থীরা
দিন কয়েক আগেই ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তখনও আবেগ ধরে রেখেছিলেন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা। কিন্তু আজ সনিয়া গাঁধীকে সামনে পেয়ে অসঙ্কোচে সব ক্ষোভ উগরে দিলেন কোকরাঝাড় হাঙ্গামায় ঘরহারা শরণার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও বড়ো প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টের (বিপিএফ) প্রধান হাগ্রামা মহিলারির সামনেই শরণার্থীরা ইউপিএ নেত্রীর কাছে অভিযোগ করলেন, ঘর জ্বালানোয় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিপিএফ বিধায়ক প্রদীপ ব্রহ্ম! চরম অস্বস্তিতে অসম সরকার। কংগ্রেস হাইকম্যান্ড অবশ্য শরণার্থী ও রাজ্য সরকার উভয়েরই পাশে দাঁড়িয়েছে।
সনিয়ার বড়োভূমি সফরের দিনেই ফের অশান্ত হয়ে ওঠে চিরাং। দাদগিরির কাছে চলন্ত টেম্পোয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে মারা যান মালদহের এক শ্রমিক। জখম দুই। সন্দেহের তির এনডিএফবি জঙ্গিদের দিকে।
এ দিন সনিয়া ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে কোকরাঝাড়ের এবং ধুবুরির নানা ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন। সনিয়াই প্রধানত শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা, সাংসদ সাংসুমা বিসমুতিয়ারি, রাজস্বমন্ত্রী পৃথ্বী মাঝি, বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারি, খাদ্য ও গণবণ্টনমন্ত্রী নজরুল ইসলাম ও বনমন্ত্রী রকিবুল হুসেন।
কোকরাঝাড়ে ত্রাণ শিবিরে সনিয়া গাঁধী। ছবি: পি টি আই
কোকরাঝাড়ের ত্রাণ শিবিরে মহিলারা সনিয়াকে জানান, রাজ্য সরকার ১৫ অগস্টের মধ্যে সকলকে শিবির ছাড়তে জোর করছে। তাঁরাও শিবিরে থাকতে চান না। কিন্তু গ্রামে এখনও নিরাপত্তার অভাব। সেই সঙ্গে অনেকের বাড়িও পুড়ে গিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ধুবুুরিতে বরকান্দা স্কুলে বয়স্ক মহিলারা সনিয়ার পায়ে লুটিয়ে পড়েন। ‘রোনা নেহি, রোনা নেহি’ বলে তাঁদের জড়িয়ে ধরেন সনিয়া। মহিলারা সনিয়াকে জানান, কী ভাবে গুলি করে তাঁদের আপনজনকে হত্যা করা হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘরবাড়ি। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার, বিধায়ক, পুলিশ কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই প্রদীপ ব্রহ্মের নাম করে শরণার্থীরা অভিযোগ করেন, সশস্ত্র জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে ওই বিধায়কই মোয়ামারি এলাকায় গ্রাম পোড়ানোয় নেতৃত্ব দিয়েছেন। ক্ষুব্ধ সনিয়া সেখানেই জানতে চান, প্রদীপ ব্রহ্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়েছে কি না। দৃশ্যতই অস্বস্তিতে গগৈ, মাথা নেড়ে সম্মতি জানান।
শরণার্থী শিবির ঘুরে এসে সনিয়া জানান, শিবিরবাসীরা ঘরে ফিরতে চান, কিন্তু ১৫ অগস্টের মধ্যে তা সম্ভব নয়। এখনও মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পরিস্থিতি সর্বতো ভাবে অনুকূল হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। শিবিরের অবস্থা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “শিবিরগুলিতে খাবার, পানীয়ের যোগান প্রয়োজন মতো হলেও শরণার্থীরা খুবই চাপাচাপি করে রয়েছেন। শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, শিবিরগুলিতে অতিরিক্ত চাপ কমাতে হবে। যাঁদের ঘরে পাঠানো হচ্ছে, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাবাহিনীও মোতায়েন করা প্রয়োজন।” অনুপ্রবেশ বিতর্ক নিয়ে অবশ্য এ দিন মুখ খুলতে চাননি সনিয়া। গগৈ-সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার যথাসাধ্য করছে। শরণার্থীরা ত্রাণ নিয়ে কোনও অভিযোগ তোলেননি। যত দ্রুত সম্ভব পুনর্বাসন ও ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা হবে।”
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গুয়াহাটি বিমানবন্দর থেকে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে সনিয়া গাঁধী ও সুশীল কুমার শিন্দে কোকরাঝাড়ে আসেন। তাঁরা বিলাসিপাড়ার চারটি শরণার্থী শিবিরে যান। বিকালে ধুবুরির পানবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি নানা অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে অসম পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। পরে হাসিমারা সেনা ছাউনির উদ্দেশে রওনা হন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.