পাশে পেলেন গডকড়ীকেও
মুক্তি পেয়েও স্টেডিয়াম ছাড়লেন না রামদেব
কালে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীকে সরাসরি পাশে পাওয়ার পর কংগ্রেসকে উৎখাত করার ডাক দিলেন। আর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনকে নাকানিচোবানি খাওয়ালেন যোগগুরু রামদেব। আজ ছিল তাঁর দুর্নীতি-বিরোধী অবস্থান-অনশনের শেষ দিন। দুপুরে তিনি রামলীলা ময়দান থেকে সংসদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। প্রচুর নাটকীয়তার মধ্যে পুলিশ অনুগামীদের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেফতার করে এবং পরে রাতে অম্বেডকর স্টেডিয়ামে মুক্তি দেয়। কিন্তু রামদেব স্টেডিয়াম থেকে সরতে রাজি হননি। রাত পর্যন্ত খবর, হাজার হাজার অনুগামীকে নিয়ে তিনি অম্বেডকর স্টেডিয়ামেই রয়েছেন। সেখান থেকেই বক্তৃতা দিয়ে চলেছেন। তাঁর দাবি, সরকারকেই তাঁর অনুগামীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কালো টাকা এবং দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে গত তিন দিন ধরে অনশন করছেন রামদেব। এ দিন তা পুরোপুরি রাজনৈতিক রং তথা কংগ্রেস-বিরোধী চেহারা নেয়। বিজেপি তথা এনডিএ নেতাদের পাশে নিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ইউপিএ সরকারকে উৎখাত করার ডাক দেন তিনি। বলেন, ‘কংগ্রেস হটাও, দেশ বচাও।’
গ্রেফতারির পর রামদেব। সোমবার। ছবি: পি টি আই।
আজ যে শুধু নিতিন গডকড়ী বা শরদ যাদব রামলীলা ময়দানে এসে রামদেবের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা নয়, ইউপিএ সরকারের ‘বন্ধু’ মুলায়ম সিংহ যাদবও তাঁকে সমর্থন জানান। কালো টাকা ফেরত আনার দাবিতে সরব হয়েছেন বসপা নেত্রী মায়াবতীও। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। রামদেবের মঞ্চে আসেন তেলুগু দেশম, অকালি দল, বিজু জনতা দলের প্রতিনিধিরাও।
চাপের মুখে সংসদে কালো টাকা নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে কেন্দ্র। আগামী সপ্তাহে এই বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ঠিক হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা দাবি করেছেন, অণ্ণা হজারে এবং রামদেবরা যে বিজেপি তথা আরএসএসের হয়েই লড়ছেন, তা এখন স্পষ্ট। কংগ্রেস মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদীর যুক্তি, রামদেব ও অণ্ণা হজারের অনুগামীদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। এটা যে কোনও নাগরিক সমাজের আন্দোলন নয় এবং এর পিছনে যে রাজনৈতিক মদত রয়েছে, তা এখন স্পষ্ট।
কংগ্রেস-বিরোধী আন্দোলনে মদত দিতে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার প্রথমে অণ্ণা এবং এখন রামদেবের দুর্নীতি-বিরোধী (যা আসলে কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলন) আন্দোলনকে সমর্থন করছে। দু’জনকে এক সঙ্গে লড়াই করানোর জন্য আরএসএস চেষ্টাও করেছিল, যদিও সফল হয়নি। তবে অণ্ণা রাজনৈতিক দল গড়বেন বলে ঘোষণা করার পরে এখন রামদেবের উপরে আপাতত ভরসা করছে বিজেপি। কারণ, বিজেপির আশঙ্কা, অণ্ণা দল গড়লে কংগ্রেস-বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হবে। এ দিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই নিতিন রামদেবের মঞ্চ থেকে বলে দেন, রামদেব নিজে রাজনীতিতে আসবেন না বা দল গড়বেন না। আবার রামদেবও বুঝতে পারছেন, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে না থাকলে তাঁকে প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হবে। এ দিন নিতিন যেমন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বলে দেন, কেন্দ্র রামদেবকে সিবিআই-কে দিয়ে হেনস্থা করতে চাইলে তাঁরা প্রতিবাদ করবেন।
সকালেই রামদেব জানিয়ে দেন, তাঁরা সংসদের বাইরে আন্দোলন করবেন। তবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে। সংসদ ঘেরাও করা হবে না। দিল্লি পুলিশ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, সংসদের অধিবেশন চলছে। তা-ই দিল্লি পুরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। রামদেবের মিছিলকে দিল্লি পুরসভা এলাকার সীমানায় আটকানো হবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাটকীয়তা বাড়তে থাকে। দেড়টা নাগাদ সংসদ অভিযান শুরুর ডাক দেন রামদেব। মাথায় কালো ফেট্টি বেঁধে একটি হুডখোলা গাড়িতে উঠে পড়েন তিনি। হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। রামলীলা ময়দান থেকে সংসদের দিকে এগোতে থাকে হাজার হাজার মানুষের মিছিল। কয়েক কিলোমিটার দূরে রঞ্জিত সিংহ উড়ালপুলের কাছেই অপেক্ষা করছিল পুলিশ। রামদেব ও তাঁর সমর্থকদের জানানো হয়, তাঁদের আর এগোতে দেওয়া যাবে না। রামদেব বার বার বলতে থাকেন, “কেউ আইন ভাঙবেন না। এরা আমাদের গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই রুখতে পারবে না।” বিক্ষোভকারীদের নিয়ে যেতে বেশ কিছু বাস নিয়ে এসেছিল পুলিশ। রামদেবকে একটি বাসে তোলা হয়। কিন্তু, রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। বাসেও উঠে পড়েন অনেকে। বাস থেকে ঝুলে সমর্থকদের সরে যেতে অনুরোধ করতে থাকেন রামদেবই। প্রায় ৪৫ মিনিট নাটক চলার পরে বাসটি রওনা হয়। পুলিশ জানায়, বাওয়ানার রাজীব গাঁধী স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হবে রামদেব ও তাঁর সমর্থকদের। সেখানে অস্থায়ী জেল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, বাওয়ানা যেতে রাজি হননি রামদেব। আইটিও ভবনের কাছে পুলিশকে বাস থামাতে বাধ্য করেন তিনি ও তাঁর অনুগামীরা। পরে তাঁকে অম্বেডকর স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.