মেট্রোর দরজায় পা আটকাল বালকের, প্রশ্ন রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে
বাতানুকূল মেট্রো রেকগুলির রক্ষণাবেক্ষণের হাল যে করুণ, সোমবার সকালে ফের তা প্রমাণ হল।
এ দিন সকালে বেলগাছিয়া স্টেশনে বাতানুকূল রেকের দরজা বন্ধ হওয়ার সময়ে এক বালকের পা আটকে যায়। বাবা ও মায়ের সঙ্গে ট্রেনে উঠতে যাচ্ছিল সে। তার চিৎকারে সহযাত্রীরাও চেঁচামেচি শুরু করলে চালক ফের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ট্রেনের হাল এমনই যে, চালকের কেবিনে প্যানেল বোর্ডের সুইচ টিপেও দ্বিতীয় বার আর ওই দরজা খোলা যায়নি। এ দিকে, পা আটকে থাকায় যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকে সে। বেশ কিছুক্ষণ এ ভাবে কাটার পরে স্টেশনকর্মীরা এসে বাইরে থেকে চাবি দিয়ে দরজা খুলে ওই বালককে বার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টা ৩৬ মিনিট নাগাদ কবি সুভাষগামী বাতানুকূল ট্রেনটি বেলগাছিয়া স্টেশনে পৌঁছয়। মেট্রো ছাড়ার সময়ে দরজা বন্ধ হতেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। যে কোনও মেট্রো রেকেই সাধারণত দরজায় কিছু আটকে গেলে চালক বুঝতে পারেন এবং দরজাটি আবার খুলে দেন। কিন্তু ত্রুটি থাকায় এ দিন দরজাটি খোলেনি।
মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “স্টেশনকর্মীরা এসে বাইরে থেকে দরজা খুলে ছেলেটিকে উদ্ধার করেন। ১১টা ৫৩ মিনিটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।” কিন্তু কবি সুভাষ স্টেশন পর্যন্ত ওই দরজাটি আর বন্ধ করা হয়নি। আরপিএফ-এর প্রহরায় দরজাটি খোলা অবস্থাতেই মেট্রো চালানো হয়েছে।
এই ঘটনায় বালকটির আঘাত মারাত্মক নয় বলে জানিয়েছেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। স্টেশনেই প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন প্যানেল বোর্ডের সুইচের সাহায্যে দরজা খুলতে পারলেন না মোটরম্যান। মেট্রোকর্তাদের একাংশ জানান, মেট্রোর দরজা ভ্যাকুয়াম পদ্ধতিতে খোলা-বন্ধ হয়। পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেন মোটরম্যান। তিনি যখন প্যানেল বোর্ড থেকে তা করতে পারলেন না, তখন এটা পরিষ্কার যে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই ঘটনা। রেলবোর্ডের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুরের কথায়, “এখানে যা ভিড় হয় তাতে দরজা আটকে যেতেই পারে। কিন্তু মোটরম্যানের প্যানেল থেকে দরজাটি খোলা উচিত ছিল।”
শুধু দিনেই নয় এ দিন সন্ধ্যাতেও মেট্রোয় যান্ত্রিক গোলযোগ হয়। একটি কামরার দরজা বন্ধ না হওয়ায় কবি সুভাষগামী একটি ট্রেন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে মিনিট কুড়ি আটকে ছিল বেলগাছিয়ায়। ফলে অফিস ফেরত যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে মেট্রো স্বাভাবিক হওয়ায় প্রচণ্ড ভিড় হয় কবি সুভাষগামী পরের ট্রেনগুলিতে। ট্রেনে উঠতে হিমশিম খেতে হয় যাত্রীদের।
নোয়াপাড়া কারশেড এখন কারখানা। ঘটা করে উদ্বোধনের পরে ওই কারখানাতেই সব ক’টি পুরনো মেট্রো রেকের নতুন করে খোলনলচে পাল্টানো ও অন্যান্য রেক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হবে বলে জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। এর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় চার মাস। পুরনো মেট্রোর খোলনলচে পাল্টানো দূর অস্ৎ, অন্য রেকগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজও হয়নি। ফলে মেট্রোগুলির অবস্থা যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে এই ঘটনাতেই তা যথেষ্ট পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সোমবারের দুর্ঘটনার পরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ স্থির করেছেন, এ বার থেকে প্রতিটি মেট্রো থামার পরে যখন দরজা বন্ধ হবে তখন একটি অ্যালার্ম বাজানো হবে। যাতে যাত্রীরা বুঝতে পারেন বেল শেষ হলেই দরজা বন্ধ হবে। এই বেল অবশ্য অনেক আগে থেকেই মেট্রোতে দেওয়া আছে। কোনও কোনও মোটরম্যান তা বাজানও। প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “এ দিনই কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই নির্দেশ মোটরম্যানদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.