পল্লবী পুরকায়স্থ খুনে অপরাধীর ফাঁসি হওয়া উচিত বলে মনে করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ। সেই অনুযায়ী মামলা সাজাতে মুম্বই পুলিশের কর্তাদের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
পল্লবী খুনের মূল অভিযুক্ত সাজ্জাদ আহমেদ মোগলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত তাকে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের যুগ্ম কমিশনার হিমাংশু রায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই খুনের মামলাটিকে নজিরবিহীন অপরাধ হিসেবে আদালতে পেশ করবেন তাঁরা এবং অপরাধীর ফাঁসির আবেদন জানানো হবে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীরও তেমনটাই নির্দেশ। পৃথ্বীরাজের পরিকল্পনা, পল্লবী খুনের অপরাধী যাতে কোনও ভাবেই ছাড়া না পায়, তার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও দরবার করবেন তিনি।
আজ পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ আনন্দবাজারকে বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এই খুনের অপরাধীর ফাঁসি হওয়াউচিত। যে রকম নৃশংস ভাবে পল্লবী পুরকায়স্থকে খুন করা হয়েছে, তা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। যে কোনও ক্ষেত্রেই আইনি জটিলতা থাকে। কিন্তু নাগরিক সমাজের সামনে এই অপরাধের শাস্তিকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা উচিত।” এ বিষয়ে তিনি মুম্বই পুলিশের কমিশনার ও অন্যান্য শীর্ষকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন পৃথ্বীরাজ।
মুম্বই পুলিশও সেটাই চাইছে। মুম্বই পুলিশের বক্তব্য, তারা রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে শুধু এই মামলার জন্যই একজন বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়োগের আবেদন জানাবেন। ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত তৈরি করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করারও আবেদন জানানো হবে। তথ্যপ্রমাণের ক্ষেত্রে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তার জন্য খুনে ব্যবহৃত ছুরি-সহ অন্যান্য প্রামাণ্য উপকরণগুলি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। পল্লবীর হাতের তালুতে লেগে থাকা চুলের সঙ্গে ধৃত সাজ্জাদের ডিএনএ মিলিয়ে দেখে, সেই পরীক্ষার রিপোর্টও আদালতে পেশ করা হবে। এ সবের উদ্দেশ্য একটাই। ধৃত যাতে কোনও ভাবেই ছাড় না পেয়ে যায়।
মেয়ের শেষকৃত্য সেরে ইতিমধ্যেই মুম্বই থেকে দিল্লিতে ফিরে এসেছেন পল্লবীর বাবা-মা অতনু ও সুমিতা পুরকায়স্থ। পুলিশের তরফে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পুলিশি হেফাজতে সাজ্জাদকে জেরার কাজও চলছে। পল্লবীর হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল কি না, সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ফ্ল্যাটবাড়ির ইলেকট্রিশিয়ান বা অন্য কোনও কর্মী সাজ্জাদকে সাহায্য করেছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছেন মুম্বই পুলিশের কর্তারা। সাজ্জাদের বাড়ি কাশ্মীরের বারামুলায়। সেখানেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মামলায় সাক্ষীসাবুদের ক্ষেত্রে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, সে বিষয়েও ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন যে ফাঁসির বিরুদ্ধে, তা মহারাষ্ট্র সরকারের অজানা নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, যে ধরনের ঘৃণ্য ও বিকৃত মানসিকতা থেকে পল্লবীকে খুন করা হয়েছে, তার কঠিন শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে তা সমাজের সামনে উদাহরণ হিসেবে কাজ করবে। |