দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরেও গঙ্গাপাড় সৌন্দর্যায়নে ভাসমান কংক্রিটের চাতাল (ডেস্ক স্ল্যাব) বানানোর ছাড়পত্র দিল না প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জায়গাটি ওই মন্ত্রকেরই ‘ব্লু জোন’ হিসেবে চিহ্নিত। সেখানে গঙ্গাবক্ষে চাতাল করার অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, নতুন কোনও কংক্রিটের কাঠামো করা যাবে না। চিঠি পেয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে পুরসভা। যদিও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এ নিয়ে ফের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলা হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন।”
মিলেনিয়াম পার্কে ইতিমধ্যেই ওই ধরনের চাতাল রয়েছে। বাবুঘাট থেকে বাজে কদমতলা অংশেও চাতাল বানানোর সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নক্শা বানানোর ভার পায় রাইট্স। ওই সংস্থা সূত্রে খবর, মিলেনিয়াম পার্কের চাতাল ৫-৬ মিটার চওড়া। খুব কাছ থেকে গঙ্গার সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দিতে বাবুঘাট থেকে বাজে কদমতলা অংশে চাতাল ১৫ মিটার চওড়া করার সিদ্ধান্ত হয়।
পুর সূত্রে খবর, অনুমতি চেয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানায় কলকাতা পুরসভা। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক পুরসভাকে জানায়, ‘ব্লু জোনে’ নতুন কংক্রিটের কাজ করা যাবে না। রাস্তার কংক্রিটের অংশ তুলে সেখানে টাইল্স বা অন্য কিছু বসানো যেতে পারে।
কলকাতাকে ‘লন্ডন’ বানাতে ত্রিফলা আলো বসেছে। টেম্স-এর অনুকরণে গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্যায়নেও উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অঙ্গ হিসেবে বাজে কদমতলা থেকে প্রিন্সেপ ঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পথ কংক্রিট করে আলো লাগিয়েছে পুরসভা। তার উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গঙ্গাকে কাছ থেকে দেখাতে চওড়া কংক্রিটের চাতাল হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্যায়নে পুরসভা, বন্দর ও রেলের মধ্যে ‘মউ’ হয়েছিল। তাতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে মল্লিকঘাট থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পর্যন্ত গঙ্গাপাড়ে (মিলেনিয়াম পার্ক বাদে) ১৫ মিটার চওড়া চাতাল হবে। রাজ্য সরকার ছাড়াও ওই জায়গার কিছু অংশ কলকাতা বন্দর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মালিকানাধীন। বন্দর অনুমতি দেওয়ায় মল্লিকঘাটের কাজ প্রায় শেষ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আপত্তিতে বাবুঘাট থেকে বাজে কদমতলার কাজ শুরু হয়নি। |