পুর-হাসপাতালের চিকিৎসকের ‘গাফিলতি’তে মৃত্যু হয়েছে সেখানে গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করাতে যাওয়া এক মহিলারএই অভিযোগকে ঘিরে শনিবার তেতে উঠল শিলিগুড়ি। ডাবগ্রামে পুরসভার ‘মাতৃসদন’ হাসপাতালে মৃত মহিলার দেহ নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন ক্ষুব্ধ আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিরা। পরে পুলিশ গিয়ে মৃতের পরিবারের অভিযোগ নথিভুক্ত করে দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে এ দিন বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। হাসপাতাল থেকে দাবি করা হয়, ওই চিকিৎসক ছুটিতে রয়েছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “কী কারণে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। ডেপুটি মেয়রকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, “রোগীর পরিবারের লোকেরা পুলিশে অভিযোগ করে থাকলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। পুরসভার কাছে এখনও এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।”
মৃতা আশা বর্মন (৩৫) শিলিগুড়ির নিরঞ্জননগরের বাসিন্দা। স্বামী উত্তম বর্মন ভ্যানচালক। দম্পতির দু’টি ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। সম্প্রতি ফের অন্তঃসত্ত্বা হন আশা। ৪ অগস্ট তাঁকে ভর্তি করানো হয় মাতৃসদনে। উত্তমবাবুর অভিযোগ, “ওই দিনই হাসপাতালে গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণের পরে আশা অসুস্থ হয়ে পড়ে।” তাঁর দাবি, “মাতৃসদনের কিছু লোক আমাকে বলেছিলেন, অপারেশনের সময়ে আশার অন্ত্রে ফুটো হয়ে যায়। সে জন্য ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর যে ডাক্তার অপারেশন করেছিলেন, তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘একটু বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে’।”
৬ অগস্ট আশাদেবীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করানো হয়। সে দিনই উত্তমবাবুরা শিলিগুড়ি থানায় মাতৃসদনে চিকিৎসায় গাফিলতিতে আশাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শুক্রবার দুপুরে আশা মারা যান। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মৃতদেহ নিয়ে আশার আত্মীয়-পড়শিরা চলে যান মাতৃসদনে। চিকিৎসকের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। প্রায় ২ ঘণ্টা চলে বিক্ষোভ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিলিগুড়ির সহকারি পুলিশ কমিশনার প্রদীপ পাল বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়না-তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।” |