দেশের অর্থনীতির দশা বেহাল। কিন্তু সেই বাস্তবকে অস্বীকার করছেন প্রধানমন্ত্রী। কার্যত ধোঁকা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে। শনিবার এ ভাবেই চাঁছাছোলা ভাষায় মনমোহন সিংহের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল বিজেপি। দাবি তুলল, এ বার বরং অর্থনীতির সমস্যা স্পষ্ট মেনে নিয়েই তা দূর করার চেষ্টা করুক কেন্দ্র।
চলতি বছরে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা এ সপ্তাহেই জানিয়েছে মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ-এর শাখা মুডিজ অ্যানালিটিকস্। সম্প্রতি ওই একই পথে হেঁটেছে ক্রিসিল এবং সিটি গ্রুপও। দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এ ভাবে একের পর এক আন্তর্জাতিক সংস্থার হতাশাজনক মন্তব্য নিয়েই এ দিন মুখ খুলেছিলেন মনমোহন সিংহ। তিনি বলেন, পরিস্থিতি অবশ্যই চিন্তার। কিন্তু এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এ নিয়ে তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোও অর্থহীন। তাঁর দাবি, কিছু সমস্যা থাকলেও, অর্থনীতির ভিত এখনও পোক্ত। তাই তা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে চলতি আর্থিক বছরেই। এবং শেষ পর্যন্ত গত বারের ৬.৫ %কে ছাপিয়ে যাবে বৃদ্ধির হার।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকেই এ দিন নিশানা করেছেন বিজেপি-র রাজ্যসভা সাংসদ অরুণ জেটলি। তাঁর অভিযোগ, “এর মাধ্যমে আসলে বাস্তবকেই অস্বীকার করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের আর্থিক ছবি যে খারাপ হচ্ছে, তা জলের মতো স্পষ্ট। জিনিসপত্রের দাম এখনও আকাশছোঁয়া। পরিকাঠামো উন্নয়নে গতি আসার লক্ষণ নেই। বাড়ছে দুর্নীতি। নীতিপঙ্গুত্বের অভিযোগ উঠছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। আর এর জেরে ভারতে টাকা ঢালতে ভরসা পাচ্ছে না বিদেশি সংস্থাগুলি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের উচিত অন্তত এই বিপদ-ঘণ্টায় জেগে ওঠা। অর্থনীতির হাল ফেরানোর লক্ষ্যে সঠিক পদক্ষেপ করতে যা জরুরি।”
চলতি বছরে কেন বৃদ্ধির হার ৬% পেরোবে না, তা স্পষ্ট বলেছে মুডিজ। তাদের মতে, অর্থনীতির সমস্যা বেশ কিছু দিনই রয়েছে। কিন্তু মুশকিল হল, তার হাল ফেরাতে চোখে পড়ার মতো পদক্ষেপ করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা কেন্দ্র। ইঙ্গিত স্পষ্ট, মুখ থুবড়ে পড়া শিল্পকে স্বস্তি দিতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক যেমন সুদ কমানোর ব্যবস্থা করেনি, তেমনই সংস্কারে গতি আনতে ব্যর্থ কেন্দ্র। অনেকেরই মতে, পূর্বাভাস ছাড়াও অর্থনীতি বেহাল হওয়ার ওই কারণ অস্বস্তিতে ফেলছে কেন্দ্রকে। আর তা প্রকট করতেই প্রধানমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন জেটলি। |