গাড়ি দাঁড় করানোর সঙ্গে সঙ্গেই পার্কিং ফি দেওয়ার জন্য জোরজুলুম করার অভিযোগ উঠছে বিধাননগরে। বেশ কয়েকটি পার্কিং এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই গাড়ির চালক বা মালিকদের এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষের মন্তব্য, এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। তবে তাঁদের দাবি, এখনও এই ধরনের কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক দফতরের দাবি, পুরসভার অনুমোদিত পার্কিং এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তা পুরসভার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
শনিবার বিকেলের ঘটনা। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের তিন নম্বর গেটের উল্টো দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বড় রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে এক জন মিনিট দুয়েকের জন্য নেমেছিলেন স্যান্ডুইচ কিনতে। তাঁর অভিযোগ, দোকান থেকে বেরোতেই আচমকা এক জন এসে তাঁকে জানান, গাড়ি যেখানে দাঁড় করানো হয়েছে সেটি পার্কিং এলাকা। অতএব পার্কিং ফি দিতে হবে। কিন্তু গাড়ির মালিকের দাবি, তিনি এত কম সময়ের জন্য গাড়ি দাঁড় করিয়েছেন যে তাকে পার্কিং বলা যায় না। দোকান থেকে স্যান্ডুইচ কিনেই গাড়ি নিয়ে তিনি চলে যাচ্ছেন। ফি দিতে অস্বীকার করে তিনি গাড়ি ছাড়তে উদ্যত হলে ওই পার্কিং-কর্মী তাঁর সতীর্থদের নিয়ে গাড়ি আটকাতে যান ও গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। বিধাননগরের বাসিন্দাদেরও অভিযোগ, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বিধাননগরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, হাসপাতাল, বিনোদনের জায়গা তৈরি হওয়ায় গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। যানজট সমস্যা কমাতে ও রোজগার বাড়াতে বিধাননগর পুরসভার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক পার্কিং এলাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা সেই পার্কিং এলাকাগুলি চালায়। আবার কিছু জায়গায় বিনামূল্যে গাড়ি রাখা যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কিং এলাকার কর্মীদের সরকারি পরিচিতি জানা যায় না। কত টাকা সরকারি ফি, তা-ও বোঝা যায় না। কোথায় কোথায় ‘ফ্রি’ এবং ‘ফি’ পার্কিং, তা-ও স্পষ্ট নয়।
বাসিন্দাদের একটি সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “এটা এক ধরনের মাস্তানি হচ্ছে। আমাদেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। পুরসভা অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক। এ ক্ষেত্রে পুলিশও দায়িত্ব এড়াতে পারে না।”
অভিযোগ শুনে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পার্কিং) অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনা অনভিপ্রেত। যদিও এখনও আমাদের কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অবশ্য এই বিষয়ে তাঁদের কোনও দায়িত্ব আছে বলে পুলিশ মানেনি। বিধাননগরের ডিসি (ট্রাফিক) প্রণব কুমার বলেন, “রাস্তা আটকে গাড়ি দাঁড় করালে অনেক সময় জরিমানা করে পুলিশ। কিন্তু পুরসভার পার্কিং প্লটের এই বিষয়টা আমাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। অভিযোগ এলে পুরসভার কাছে পাঠানো হবে।” |