ভারত সঞ্চার নিগমের বেহাল পরিষেবার জন্য বিপাকে পড়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় এক দিকে নিয়মিত রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অন্য দিকে সরকারি তথ্য নথিভুক্ত করা ও আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “একমাস থেকে ওই পরিস্থিতি চলছে। প্রশাসনের কাজকর্ম সচল রাখতে সমস্যা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আর্জি জানানো হয়েছে। কর্ণজোড়ায় একটি নতুন এক্সচেঞ্জ চালু করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।” বিএসএলের উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার সন্দীপ ঘোষ বলেন, “জেলাশাসক সমস্যার কথা জানিয়েছেন। রায়গঞ্জের মেইন এক্সচেঞ্জ থেকে কর্ণজোড়া পর্যন্ত প্রায় চার কিমি মাটির নীচে কেবলের তার জীর্ণ হয়ে পড়ায় ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলায় পর্যাপ্ত টাওয়ার ও উন্নত যন্ত্রাংশের অভাব আছে। পরিকাঠামোর অভাবে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” বিএসএনএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে কর্ণজোড়ায় নতুন এক্সচেঞ্জ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ওই কাজ দ্রুত শুরুর চেষ্টা চলছে। জেলায় প্রায় ২ লক্ষ বিএসএনএল মোবাইল গ্রাহক আছে। টাওয়ার রয়েছে ৭৫টি। বিএসএনএলের উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের অফিসারদের কয়েকজন মনে করেন মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে জেলায় আরও অন্তত ৫০টি টাওয়ার বসানোর প্রয়োজন। কর্ণজোড়ায় জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সরকারি দফতরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে সরকারি কাজ চলে। বিভিন্ন দফতরে ওয়েবসাইট থেকে সরকারি নির্দেশিকা ও জরুরি তথ্য সংগ্রহ করে নথিভূক্ত করতে হয়। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে নিয়মিত ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্ন রিপোর্ট পাঠানো হয়। রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের কাছে জরুরি নির্দেশ পাঠায়। ট্রেজারি ও রেজিষ্ট্রি অফিসের কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। জেলাশাসক বলেন, “ইন্টারনেট পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ায় মানুষ বিভিন্ন দফতরে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন।” ফোনের সংযোগ একবার বিচ্ছিন্ন হলে সহজে স্বাভাবিক হয় না। লাইন পাওয়া ভাগ্যের হয়ে দাঁড়িয়েছে। টানা কয়েক বার ডায়াল করার পরে লাইন মিলছে। কিন্তু লাইন পেয়ে শান্তি নেই। কথা বলতে বলতে মাঝপথে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “বিএসএনএলের পরিষেবার কারণে জেলা পরিষদের কাজ শিকেয় উঠতে বসেছে।” |