ঠিকানা অজানা, ফিরতে পারছে না মা ও শিশু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
সন্তানের জন্ম দেওয়া এক প্রসূতি নিজের ঠিকানা জানাতে না পারায় তাঁকে বাড়ি পাঠাতে পারছে না রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগেই তাই গত ৪ জুলাই থেকে নিজের শিশুপুত্রকে নিয়ে রয়েছেন বছর ত্রিশের ওই মহিলা। তাঁর অসংলগ্ন কথায় জানা গিয়েছে, বিহারের বীরপুর এলাকায় তাঁর বাপের বাড়ি। সেই ঠিকানার সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ জুলাই রাতে রামপুরহাট রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মের উপর গর্ভবতী ওই মহিলাকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেন রেলপুলিশ কর্মীরা। তাঁরা ওই মহিলার কাছ থেকে তাঁর পরিচয় জানতে পারেননি। পরে স্টেশন সংলগ্ন রেল হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। গভীর রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘণ্টাখানেক পরে সেখানে তিনি একটি ছেলের জন্ম দেন। সাধারণত স্বাভাবিক সন্তান প্রসব হলে জন্ম দেওয়ার পরের দিন মা ও শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই মহিলাকে হাসপাতাল কর্তপক্ষ ছুটি দিতে পারেননি।
রামপুরহাট হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “ওই প্রসূতিকে বার বার জিজ্ঞাসা করেও তাঁর সঠিক ঠিকানা জানা যায়নি। প্রথম দিকে তিনি মধ্যপ্রদেশের কোনও একটা জায়গার নাম বলছিল। কিন্তু সঠিক ঠিকানা জানাতে পারেননি। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, বিহারের বীরপুর এলাকায় তাঁর বাড়ি। তাঁর বাবার নামও জানিয়েছেন। পুলিশের মাধ্যমে ওই ঠিকানায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাঁর ঠিকানা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাঁকে ও তাঁর সন্তান থেকে ছাড়তে পারছি না।” হাসপাতালের বিছানায় নিজের ছেলেকে কোলে নিয়ে ওই মহিলা হিন্দিতে অসংলগ্ন ভাবে যা বললেন, তাঁর সামরর্ম হল, তাঁর নাম সুলেখা রাম। মধ্যপ্রদেশের সারসায় বছর দু’য়েক আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। বাপের বাড়ি বীরপুরে আসার জন্য তিনি ট্রেনে চেপেছিলেন। তারপর রামপুরহাটে কী করে চলে আসেন তা জানাতে পারেননি। রামপুরহাটের মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “হাসপাতাল সুপারের কাছে ওই মহিলার কথা শুনেছি। তাঁর বাড়ির লোকেদের খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে আপাতত হাসপাতালেই রাখতে বলা হয়েছে।” সুপারও জানান, ওই মহিলাকে বাড়ি না পাঠানো পর্যন্ত তাঁরাও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। |