কুমলাইতে ত্রাণের ব্যবস্থা, ১০০ দিনের কাজ শুরু
জ্বর ছড়াচ্ছে বন্ধ বাগানে
পুষ্টিজনিত রোগ তো ছিলই। এবার ডুয়ার্সের বন্ধ কুমলাই চা বাগানে অজানা জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। অপুষ্টিতে ভুগে ও জ্বরে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত বাগানে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ জন ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই অপুষ্টির শিকার বলে কুমলাই চা বাগানের হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে আক্রান্তদের কী ধরনের জ্বর হয়েছে তা এদিন পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে স্পষ্ট নয়।
গত সোমবার চা শ্রমিক এতোয়া ওঁরাওয়ের তিন বছরের মেয়ে সনিয়ার মৃত্যু হয়। সেদিন থেকে তাঁর বড় ছেলে ভিকিরও জ্বর। হাসপাতালে দাঁনিয়ে এতোয়া বলেন, “ঘরে-ঘরে জ্বর। খাবার দিতে পারছি না সকলকে। কী যে হবে!” এদিন থেকে কুমলাই চা বাগানে পরিবার পিছু ৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে একই লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণের চাল নিলেন বাগানের অন্য কর্মীরাও। বাগানের কয়েকজন কর্মী বললেন, “এমন অবস্থায় পড়ব কোনদিন ভাবিনি।” এদিন কুমলাই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান জলপাইগুড়ি জেলা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুপ দেব সিংহ। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “যদিও রক্ত পরীক্ষার রিপোট মেলেনি। তবে উপসর্গ দেখে ম্যালেরিয়া নয় বলেই মনে হচ্ছে। চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের সংক্রমণ হয়েছে কি না তা রিপোর্ট না দেখে বলা সম্ভব নয়।” যে হাসপাতালে রোগীদের ভর্তি করা হয়েছে, সেখানকার কর্মী জগন্নাথ ভূমিচও জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকেও ওই হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়েছে। বাগানের হাসপাতালের ওই কর্মী বললেন, “দুমাস ধরে মাইনে পাইনি। বাঁ পা ফুলে রয়েছে। জ্বর হয়েছে।” পাশাপাশি, ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবার দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। ৯ কিলোমিটার দূরে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হলে রোগীরা খাবার পেতেন। তবে কুমলাই হাসপাতালে যাতে রোগীদের জন্যে খাবার রান্না করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান মালবাজারের মহকুমা শাসক নারায়ণ বিশ্বাস। এ দিনই কুমলাই চা বাগানে একশো দিনের প্রকল্পের কাজও শুরু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার একশো দিনের কাজ চলছে কুমলাই চা বাগানে।
মালবাজার মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে ডামডিম গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এই কাজ করানো শুরু হয়েছে। তবে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের শ্রম সংগঠন প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন একশো দিনের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পরিষদ নেতা তথা কুমলাই এর বাসিন্দা অমরদান বাক্সলা বলেন, “কারা একশো দিনের কাজ করছেন তা আমরা জানতে পারছি না। সব সংগঠনকে নিয়ে কমিটি গড়ে কাজ বন্টন করা উচিত। তার বদলে সিপিএম এখানেও দলতন্ত্র খাটাচ্ছে।” ডামডিম সিপিএমের প্রধান ইন্দ্রজিত সিংহ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “৭০০ শ্রমিক আজ থেকে নিকাশি নালা সংস্কারের কাজ করছেন। দলতন্ত্রের কোন বিষয় নেই।” উল্লেখ্য, কুমলাই এর জট কাটাতে গত মাসে প্রশাসনের ডাকা মোট চারটি বৈঠকে মালিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত হননি। আগামী ৩ অগষ্ট বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেদিনের দিকেই রয়েছেন কুমলাই এর শ্রমিকরা।

ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.