ভুরি ভুরি অভিযোগ শ্রীরামপুর ওয়ালশে |
সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ হাসপাতালে |
সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই।
যে হাসপাতালে প্রতিদিন শ্রীরামপুর মহকুমা-সহ আশপাশের এলাকার রোগীদের ভিড় লেগে থাকে, সেখানে প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে স্যালাইন নেই। কুকুর-বেড়াল কামড়ানোর ভ্যাকসিন সে ভাবে মিলছে না। এক্স-রে প্লেট নেই। অন্যান্য পরিষেবার হালও তথৈবচও। তাঁদের নানা ভাবে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের।
এর উপরে খোদ হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধে নিয়মিত না আসার অভিযোগ উঠেছে। সুপারের নিয়মিত আসা, চিকিৎসকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া-সহ ১১ দফা দাবিতে বুধবার হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় ডিওয়াইএফআই। ঘণ্টা দুয়েক ঘেরাও করে রাখা হয় সুপারকে। সুপার বিবেকানন্দ সরকার অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমি রোজই আসি। অভিযোগ ঠিক নয়। অনেক কাজ নিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। চেয়ারে না থাকলেই কেউ যদি ভাবেন আমি আসিনি, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।” পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কথা মেনে নিলেও রোগীদের হয়রানির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুপার।
হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল বলেন, “হাসপাতাল সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ যেখানে জানানোর জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।” তবে, প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবের কথা তিনি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ওষুধের কোনও অভাব নেই। এক্স-রে প্লেটের কিছু সমস্যা থাকতে পারে।” |
কী বলছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনেরা?
স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালে প্রসূতিদের সম্পূর্ণ নিখরচায় চিকিৎসা হওয়ার কথা। তাঁকে গাড়ি করে হাসপাতালে আনা এবং প্রসবের পরে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও হাসপাতালের। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ, স্যালাইন মজুত না থাকায় অন্য রোগীদের মতোই প্রসূতিদের পরিবারকেও বাইরে থেকে তা কিনে দিতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধও বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। বিপিএল তালিকাভুক্ত রোগীদের জন্য সরকার যে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়, সে কথা অনেককেই জানানো হয় না।
স্যালাইন না থাকায় যে কোনও দিন বড় গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে হাসপাতাল কর্মীদের মধ্যে। কুকুর-বেড়ালে কামড়ানোর ওষুধ অ্যান্টি র্যাভিস ভ্যাকসিন (এআরভি) বাড়ন্ত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতিদিন অন্তত ২৫টি এআরভি প্রয়োজন হয়। কিন্তু কিছু দিন ধরে তা নামমাত্র সরবরাহ হচ্ছে। ফলে, ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই।
এ তো গেল ওষুধ না পাওয়া নিয়ে রোগীদের ক্ষোভ। রয়েছে পরিকাঠামোগত সমস্যাও।
হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ইসিজি-র দু’জন টেকনিশিয়ানের বদলে রয়েছেন এক জন। আলট্রাসোনেগ্রাফি-র চিকিৎসক আগামী ৩১ অগস্ট অবসর নিচ্ছেন। সেই কারণে নতুন ভাবে তার পরে কারও ওই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এই মূহূর্তে এক জন ‘ওয়ার্ড-মাস্টার’ দিয়েই চলছে হাসপাতাল। অভিযোগ, দুপুর ১টার থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগে দু’জন চিকিৎসকের বদলে দেখা মেলে এক জনের। অনেক চিকিৎসক প্রতিদিন হাসপাতালে আসেন না। দুপুর দেড়টার পরে বহির্বিভাগে কোনও চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে এমন উদাহরণও রয়েছে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশই বলছেন, “অনেকেরই তো নার্সিংহোমে যাওয়ার তাড়া রয়েছে! তাঁদের সময়মতো দেখা মিলবে কী করে?”
স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, রোগী যে চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি, প্রতিদিন সেই চিকিৎসককে পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু সেই চিকিৎসকের দেখা প্রতিদিন মেলে না। ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে স্ত্রী-রোগ, নাক-কান-গলা এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞদের নিয়েও। রয়েছে দুর্ব্যব্যহারের অভিযোগও।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা মহকুমাশাসক মুক্তা আর্য জানিয়েছেন, স্যালাইন-সহ রাজ্যে ওষুধ নিয়ে সমস্যা সার্বিক ভাবেই রয়েছে। তবে, অন্যান্য অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
গাঁজা-সহ ধৃত। মাদক পাচারের অভিযোগে হাসনাবাদে থানার পুলিশ এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। হাসনাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাটের বাসিন্দা ওই দুষ্কৃতীর নাম জাহাঙ্গির গাজি। পুলিশ জানিয়েছে, জাহাঙ্গিরের কাছ থেকে ৪ কিলোগ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। |