আপত্তি জানাল পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত
স্বাস্থ্যে কমিশন বিল আটকাল সাত রাজ্যের আপত্তিতে
শ্চিমবঙ্গ-সহ মোট সাত রাজ্যের আপত্তিতে আপাতত আটকে গেল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মানবসম্পদ বিষয়ক জাতীয় কমিশন গঠন সংক্রান্ত বিতর্কিত বিল। জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র তৈরি করা ও পণ্য পরিষেবার করের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার রাজ্যগুলির বিরোধিতায় কেন্দ্রের কোনও পরিকল্পনা ধাক্কা খেল।
গত বছর এই বিলটি সংসদে নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বিভিন্ন দলের আপত্তি থাকায় তা আলোচনার জন্য পাঠানো হয় স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে সেই স্থায়ী সংসদীয় কমিটির বৈঠক হয়। কমিটির চেয়ারম্যান হলেন বিএসপি সাংসদ ব্রজেশ পাঠক। তবে তিনি বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর দায়িত্ব পালন করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। বৈঠকে বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানায় পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র বৈঠকে জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। কিন্তু ওই বিলের একাধিক শর্তে রাজ্যের ভূমিকায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে আরও অভিযোগ ছিল, বিলে রাজ্য স্তরে একাধিক কমিশন ও বোর্ড গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। অথচ, তাতে রাজ্যের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়নি। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের বক্তব্য, মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, নার্সিং কাউন্সিল, আয়ুর্বেদিক কাউন্সিল, ফার্মেসি কাউন্সিল, ডেন্টাল কাউন্সিলের মতো প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি জাতীয় কমিশনের ছাতার তলায় আনার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র। কমিশনের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন না। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের মনোনীত করবেন। তাঁরা প্রত্যেকে চিকিৎসক না-ও হতে পারেন। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ওই প্রতিটি কাউন্সিল এবং রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলগুলির অধিকার খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে চিকিৎসার গাফিলতিতে শাস্তি দেওয়া, সব কিছুর ক্ষমতাই কমিশনের হাতে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল কেন্দ্রের। এতে রাজ্যগুলির আপত্তি আরও বেড়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক সংগঠনগুলি জানিয়েছিল, এখন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল কাউকে দোষী সাব্যস্ত করলে তার বিরুদ্ধে এমসিআইয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু শুধু কমিশন থাকলে তারাই কোনও চিকিৎসা গাফিলতির মামলায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সর্বোচ্চ ও একমাত্র সংস্থা হবে। তার মতের বিরুদ্ধে চিকিৎসক আর কোথাও আবেদন করতে পারবেন না। চিকিৎসকেরা এটা মানতে চাননি।
মঙ্গলবারের বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র দাবি করেন, কমিশনে রাজ্যের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিক কেন্দ্র। পালা করে রাজ্যের প্রতিনিধিদের রাজ্য কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। একই দাবি করা হয়েছে বাছাই কমিটির ক্ষেত্রেও। পাশাপাশি বিলে যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে তাতেও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের নেওয়ার দাবি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
গত কাল পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই বিলটির বিরোধিতায় সোচ্চার হয় গুজরাত। তারা লিখিত ভাবে নিজেদের বিরোধিতার কারণও কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে।
এর আগেই লিখিত ভাবে বিলটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ুর মতো মোট পাঁচ রাজ্য। উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটক এখনও ওই বিলটি নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে স্বাস্থ্যমন্ত্রক ধরেই নিয়েছে, ওই রাজ্যগুলিরও বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে দুর অস্ত্, শীতকালীন অধিবেশনেও সব পক্ষকে রাজি করিয়ে ওই বিলটি আনা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “যে ভাবে অধিকাংশ রাজ্যই বিলটি নিয়ে নিজেদের আপত্তি জানিয়েছে তাতে এই বিলটির দিনের আলো দেখা মুশকিল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.