মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি জেলা ভাগে উদ্যোগী হতে পৃথক ব্লকের মর্যাদার আশায় বুক বেঁধেছেন ডুয়ার্সের বানারহাট এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলায় উন্নিত করার কাজ শেষ হলে বানারহাট ব্লকের স্বীকৃতি পাবে। ঘুচবে দীর্ঘ যন্ত্রণা। যদিও প্রশাসনের কর্তারা ওই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাতে রাজি হননি। মহকুমা শাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “আপাতত শুধুমাত্র জেলা ভাগ নিয়ে কথা হয়েছে। ব্লক ভাগের বিষয়টি এখনও আসেনি। তবে কোনও এলাকার বাসিন্দারা পৃথক ব্লকের দাবি জানালে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” ধূপগুড়ি ব্লকের অন্তর্গত বানারহাট থানা এলাকা ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত প্রসারিত। ২২টি চা বাগান রয়েছে এখানে। জনসংখ্যা ২ লক্ষাধিক। ভুটান সীমান্তের চামুর্চি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের সরকারি কাজের জন্য ৪০ কিলোমিটার দূরে ধূপগুড়ি বিডিও অফিসে যেতে হয়। বানারহাট থেকে ধূপগুড়ির দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দূরত্বের জন্য প্রতিনিয়ত তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। উন্নয়নেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। চা বাগান এলাকার গরিব মানুষদের ব্লক অফিসে দৌড়ঝাপ করা সম্ভব না হওয়ায় তাঁরা সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বানারহাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিজয় বড়ুয়া বলেন, “ব্লক অফিসে সামান্য কাজে যেতে সারা দিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়। আলাদা ব্লক হলে মানুষের দুর্ভোগ যেমন কমবে। পাশাপাশি উন্নয়নের কাজে গতি আসবে। চামুর্চি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা রেজা করিম জানান, দুটি গাড়ি পাল্টে ধূপগুড়ি পৌঁছতে হয়। যাতায়াতের খরচ ৫০ টাকার বেশি। গরিব মানুষের পক্ষে এ ভাবে খরচ করে ব্লক অফিসে কাজ করা সম্ভব হয় না। বানারহাট পৃথক ব্লক হলে ওই সমস্যা থাকবে না। ব্লকের দাবি নতুন নয়। ১৯৯৮ সাল থেকে আন্দোলনে সামিল কংগ্রেস। দলের জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সদস্য মনি ডারর্নাল বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে বানারহাটকে পৃথক ব্লক ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন চলছে। বামফ্রন্ট সরকার ওই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। নতুন সরকার জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সাঁকোয়াঝোরা ও বিন্নাগুড়ি জলপাইগুড়ি জেলায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে ধূপগুড়ির মত বড় ব্লক ভাগ করে বানারহাটকে পৃথক ব্লকের মর্যাদা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।” একই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের নেতা নয়ন দত্ত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কাজের গতি আনতে জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ করার কথা ঘোষণা করেছেন। আমরা আশা করছি আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলায় উন্নীত হলে ধূপগুড়ি ব্লক ভাগ করে বানারহাটকে পৃথক ব্লকের মর্যাদা দেওয়া হবে।”
|