|
|
|
|
বিদ্যুৎ বিপর্যয় |
নিজেদের বিচ্ছিন্ন করার সুযোগই পায়নি এ রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিপর্যয়ের স্মৃতি পিছনে ফেলে ফের ছন্দে ফিরল পশ্চিমবঙ্গ।
টানা প্রায় বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকার পরে মঙ্গলবার মাঝ রাত থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। বুধবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজ্যের সার্বিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি চালু হয়ে গিয়েছে। এ দিন দুপুরের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায় উত্তরাঞ্চল গ্রিডও। পশ্চিমাঞ্চল গ্রিডও ফের নিজেদের মূল গ্রিডের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিশেষ পরিকাঠামো ব্যবহার করে পশ্চিমাঞ্চল গ্রিড নিজেদের মূল গ্রিড থেকে আলাদা করে নিয়েছিল। এ রাজ্যে সিইএসসি-ও একই ভাবে নিজেদের আলাদা করে নিয়েছিল। ঘটনা হল, ওই পরিকাঠামো রয়েছে দেশের সব ক’টি বিদ্যুৎ সংস্থারই। কিন্তু তবুও কেন পূর্বাঞ্চল গ্রিড বা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম নিজেদের মূল গ্রিড থেকে সরাতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তারা বলছেন, যে কোনও বিদ্যুৎ সংস্থাই প্রয়োজনে নিজেদের জাতীয় গ্রিড থেকে সরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু মঙ্গলবার সেই সুযোগটাই রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম পায়নি বলে তাঁদের দাবি। নিগমের এক কর্তা বলেন, “গ্রিড নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা অনেকটা সাপে কাটার রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার মতো। যদি সাপে কাটার ঠিক পরেই কামড়ানোর জায়গার উপরে শক্ত বাঁধন দেওয়া যায়, তবে বিষ আর রক্তে মিশে শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে না। কিন্তু বিষ এক বার শরীরে ঢুকে গেলে সেই বাঁধন আর কাজে লাগে না।”
ওই কর্তাটির ব্যাখ্যা, “মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ পশ্চিমাঞ্চল গ্রিড থেকে উত্তরাঞ্চল গ্রিডে কোনও বিদ্যুৎ যাচ্ছিল না। তাই পশ্চিমাঞ্চল গ্রিডের পক্ষে নিজেদের সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ওই সময়ে মজফ্ফরপুর-গোরক্ষপুর জংশন দিয়ে পূর্বাঞ্চল গ্রিড দিয়ে হু হু করে বিদ্যুৎ যাচ্ছিল উত্তরাঞ্চল গ্রিডে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল গ্রিডও বিদ্যুৎ দিচ্ছিল পূর্বাঞ্চল গ্রিডে। ফলে দ্রুত গ্রিড বন্ধ করে দেওয়া, অর্থাৎ বাঁধন দেওয়ার কাজটি করে ওঠা যায়নি।”
রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তাদের মতে, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল গ্রিড পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই বিপর্যয়ের বিষ ওই দুই গ্রিডে ঢুকে পড়েছিল। তাই তাদের বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় ছিল না। উত্তরাঞ্চল গ্রিড বসে যাওয়ার ধকল আর তারা নিতে পারেনি। কিন্তু সিইএসসি বিপর্যয় এড়াল কী করে? ওই কর্তাদের বক্তব্য, সিইএসসি-ও সেই সময় খুব অল্প বিদ্যুৎ নিচ্ছিল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের থেকে। ফলে তাদের পক্ষে দ্রুত বাঁধন দিতে কোনও সমস্যা হয়নি।
বস্তুত, মঙ্গলবার রাজ্য-জোড়া অন্ধকারের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল সিইএসসি পরিষেবাভুক্ত এলাকাগুলিই। সিইএসসি-র কাছ থেকে বিদ্যুৎ নিয়েই মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে নিজেদের বিকল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি সচল করে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম। রেল চলাচলও প্রাথমিক ভাবে শুরু হয় সিইএসসি-র বিদ্যুৎ দিয়েই।
|
নাস্তানাবুদ রেল |
পথে হল দেরি |
ট্রেনের নাম |
কলকাতামুখী |
নয়াদিল্লি- শিয়ালদহ দুরন্ত |
সাড়ে চার ঘণ্টা |
নয়াদিল্লি-হাওড়া দুরন্ত |
সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা |
দুন এক্সপ্রেস |
সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা |
নয়াদিল্লি-হাওড়া রাজধানী |
সাড়ে তিন ঘণ্টা |
নয়াদিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী |
সাত ঘণ্টা |
মুম্বই-হাওড়া জ্ঞানেশ্বরী |
দু’ঘণ্টা |
পুনে-হাওড়া আজাদহিন্দ |
তিন ঘণ্টা |
আমদাবাদ এক্সপ্রেস |
সওয়া তিন ঘণ্টা |
ট্রেনের নাম |
কলকাতা থেকে |
মুম্বই দুরন্ত |
তিন ঘণ্টা |
ভুবনেশ্বর জনশতাব্দী |
তিন ঘণ্টা |
ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস |
এক ঘণ্টা |
অমৃতসর মেল |
দু’ ঘণ্টা |
বাতিল |
টাটা-আসানসোল এক্সপ্রেস |
লালকিল্লা এক্সপ্রেস |
|
|
|
|
|
|