|
|
|
|
বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় |
আলুর চালান বন্ধে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আলুর ‘ফরোয়ার্ড ট্রেডিং’ (আগাম বিক্রি) বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্যের বাইরে আলু পাঠানো পুরোপুরি বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সে নির্দেশ কতটা মানা সম্ভব, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
সব্জির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকার যে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে, বুধবার তার বৈঠক হয়। সেখানেই বাইরে আলু পাঠানো বন্ধ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কী ভাবে তা পালন করা হবে, তা নিয়ে প্রশাসন এবং হিমঘর মালিকদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের’ অন্যতম কর্তা পতিতপাবন দে বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, আন্তঃরাজ্য আলু সরবরাহ বন্ধ করা যায়, এমন কোনও আইন নেই।” তাঁর কথায়, “এ রাজ্যের আলু অন্য রাজ্য চালান না গেলে চাষিরা মার খাবে। কারণ, চাহিদার তুলনায় হিমঘরে বেশি আলু থেকে যাবে। এর ফলে অন্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে আলুর দাম অনেক কমে যাবে। ফলে চাষিরাও আলুর দাম কম পাবে।” রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের এক মুখপাত্রও মেনে নিয়েছেন, রাজ্যের বাইরে আলু পাঠানো বন্ধ করার মতো আইন সত্যিই হাতে নেই।
হিমঘরে আলু মজুত থাকা সত্ত্বেও আলুর দাম কেন বাড়ছে, বৈঠকে সেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে তাঁকে জানান, রাজ্যে হিমঘরে যে ৫০ লক্ষ টন আলু রয়েছে, তার মাত্র ৩৬% এ পর্যন্ত বেরিয়েছে। হিমঘর মালিকদের বক্তব্য, নতুন আলু না ওঠা পর্যন্ত আগামী পাঁচ মাস এই আলুই বাজারে সরবরাহ করা হবে। ১০% মজুত রাখা হয় আলু বীজ হিসাবে। এই কারণেই খুব বেশি আলু হিমঘর থেকে বের করা যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য যে কোনও মূল্যে বাজারে আলুর দাম কমাতে নির্দেশ দিয়েছেন। আলু যাতে বাইরে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে এনফোর্সমেন্ট, রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের কর্তাদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরও নির্দেশ, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া কারও নামে হিমঘরে আলু মজুত থাকলে, তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
এই দিনের বৈঠকে ফলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছে, টাস্ক ফোর্স ফলের বাজারেও অভিযান করে দাম কমানোর চেষ্টা করবে। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে ফলের দাম কী, বৈঠকে তার একটি তালিকা পেশ করে টাস্ক ফোর্স। দেখা যায়, কিলোপ্রতি আপেল ২০০ টাকা, ন্যাসপাতি ১০০ টাকা, আম ৮০ টাকা, বেদানা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই ভাবে এক ডজন মুসাম্বি ৭০ টাকা ও পাকা কলা ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, “টাস্ক ফোর্স কাজ করার ফলে সব্জির দাম ৪০ থেকে ৭০% কমেছে।” এ দিনের বৈঠকে পরিবহণে সব্জির ‘ওভারলোডিং’-এর প্রসঙ্গটি ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দেন, সব্জির লরিতে সামান্য ওভারলোডিং হলে ছাড় দিতে হবে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ওভারলোডিং হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। |
|
|
|
|
|