চতুর্থ ম্যাচটা যথেষ্ট কর্তৃত্ব নিয়ে জিতে সিরিজ জিতে নিল ভারত। হালফিলে দু’দেশের মধ্যে মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারতই বেশি শাসন করেছে। শ্রীলঙ্কার দুর্বল বোলিং দেখে মনে হচ্ছে এই ধারা এখন চলবে। দেশে বা ওদের মাঠে যেখানেই খেলুক, শ্রীলঙ্কার এই বোলিং নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের রাতের ঘুম চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। মালিঙ্গা ছাড়া কাউকে দেখছি না যে প্রতিপক্ষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে। নতুন বলের পালিশ চলে গেলেই এই দুর্বল বোলিংয়ের উইকেট তোলার ক্ষমতা থাকছে না।
অন্য দিকে, ভারতীয় দলটার দিকে তাকান। এমন একটা দল যাদের হাতে অনেক ম্যাচ-উইনার রয়েছে। একার হাতে এরা ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে। বিরাট কোহলি এই তালিকায় এক নম্বরে থাকবে। তিন নম্বরে রাজকীয় ফর্মে রয়েছে কোহলি এবং যে ভাবে ও একা ম্যাচ জেতাচ্ছে সেটা অভিনব। কোহলি খুবই স্পেশ্যাল প্রতিভা এবং ও যদি মাথাটা ঠাণ্ডা রাখতে পারে তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটে ও-ই পরের মহাতারকা হতে যাচ্ছে। আমি নিশ্চিত কোহলির মাথা ঘুরে যাবে না।
৬০ রানে তিন উইকেট চলে গিয়ে ভারত একটু সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল ঠিকই। ম্যাচটা যে কোনও দিকে চলে যেতে পারত। কিন্তু মনোজ-রায়নাকে নিয়ে কোহলি ঠিক ম্যাচ বের করে নিয়ে গেল। সেঞ্চুরি করাই সব নয়। যে শিল্প এবং গুণগত মান দেখিয়ে সেঞ্চুরিটা করল সেটাই কোহলিকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে দিচ্ছে। ওর ফুটওয়ার্ক এবং দ্রুত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ওর সেরা অস্ত্র। সিরিজটা রায়নার জন্যও খুব ভাল গেল। ওর ব্যাটিংয়ে অনেক পরিণতিবোধ দেখলাম। যে জায়গায় ও ব্যাট করতে নামছে সেখানে নেমে সফল হওয়া কিন্তু সহজ নয়। বাউন্ডারি মারার একটা সহজাত দক্ষতা রায়নার মধ্যে রয়েছে। আশা করব এখান থেকে ও উন্নতি করতে থাকবে।
ভারতীয় বোলিং চতুর্থ ম্যাচটায় দুর্দান্ত করেছে। আর ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সেরা ছিল অশোক দিন্দা। দারুণ পেসে বল করেছে দিন্দা। বাউন্সার ওয়ান ডে ক্রিকেটে একটা ভাল অস্ত্র। সেটা ব্যবহার করতেও ভয় পায়নি। একটা কথা বলছি। ভারতের টেস্ট এবং ওয়ান ডেদু’টো টিমেই দিন্দা সম্পদ হয়ে উঠবে। আশা করব ওকে নিয়মিত খেলানো হবে। এ রকম এক জন বোলার হাতে থাকা যে কোনও ক্যাপ্টেনের সৌভাগ্য। যে কোনও ক্যাপ্টেনের জন্য সারা দিন ধরে ও জান দিয়ে বোলিং করে যেতে পারে। মনোজ তিওয়ারির জন্যও খুব ভাল গেল দিনটা। স্পিন ভাল খেলার জন্য যাদের সুনাম সেই শ্রীলঙ্কানদের বিরুদ্ধে স্পিনে চারটে উইকেট তুলল মনোজ। ব্যাটিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে মনোজের বোলিং দলের জন্য বড় বোনাস হয়ে দেখা দিতে পারে।
সিরিজের আর একটাই ম্যাচ পড়ে আছে। দারুণ কিছু চমক আমদানি না করতে পারলে শ্রীলঙ্কার জেতার কোনও সম্ভাবনা আমি দেখছি না। মাহেলা অনেক নীচের দিকে ব্যাট করছে। এটা নিয়ে ওর ভাবা উচিত যেহেতু বড় স্কোর তুলতে গেলে ওর টিমের দরকার ওপরের দিককার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে সেঞ্চুরি। ওপরের দিকে নামলে শুরুর দিককার চাপটাও মাহেলা নিজে সামলাতে পারবে। পরের দিকে নেমে সেটা করতে গিয়ে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। |