কান্দুয়া মামলা
আমতার গ্রামে হামলার ঘটনায় শুনানি শুরু
১ বছর পরে শুরু হল কান্দুয়া মামলার শুনানি।
বুধবার হাওড়া জেলা আদালতে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাসরঞ্জন দে-র এজলাসে শুরু হয় এই মামলার শুনানি। ১৯৯১ সালের ১৮ জুন বিধানসভা নির্বাচনের পরের দিন হাওড়ার আমতার কান্দুয়া গ্রামে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। গোপাল পাত্র নামে কংগ্রেসের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে খুন করা হয়। হাত কেটে নেওয়া হয় কয়েক জন কংগ্রেস সমর্থকের। চালানো হয় অবাধ লুঠপাট। ১১৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকে সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মী। বুধবার শুনানির প্রথম দিনে অভিযোগকারীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ দিন সাক্ষী ছিলেন গোপালবাবুর ছেলে কার্তিক পাত্র।
• সকাল ৭টা-১২টা পর্যন্ত তাণ্ডব চলে।
• কংগ্রেসের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে খুন করা হয়।
• ছ’জন পুরুষ-মহিলার হাত কেটে নেওয়া হয়।
• মারধরে ছ’জন পঙ্গু হন।
• শতাধিক বাড়িতে লুঠপাট।
• বহু ধানের মরাই পোড়ে।
• ১১৯ জনের নামে এফআইআর দায়ের হয়।
কান্দুয়ার ঘটনা তৎকালীন রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ছড়ায়। ঘটনার দিন হামলা শুরু হয়েছিল সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ। হাজারখানেক হামলাকারী তরওয়াল, লাঠি, বল্লাম নিয়ে গ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তরোয়ালের কোপে খুন করা হয় গোপালবাবুকে। এক মহিলার স্তন কেটে নেওয়া হয়। ছ’জন পুরুষ-মহিলার ডান হাত কনুই থেকে কেটে ফেলে দেওয়া হয়। প্রতিটি বাড়িতে চলে অবাধ লুঠতরাজ। বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং ১০০টি ধানের মরাইয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাণ্ডব চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত। হামলাকারীরা পুলিশকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে দুষ্কৃতীরা চলে গেলে পুলিশ গ্রামে আসে। ঘটনার পর পরই গ্রামে আসেন তৎকালীন যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে তিনি আন্দোলন শুরু করেন। মোট ১১৯ জন সিপিএমের স্থানীয় নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। গ্রামবাসীদের আতঙ্ক দূর করতে গ্রামে ইএফআর জওয়ানেরা টহলদারি চালান তিন বছর ধরে।
পরবর্তীকালে ১১৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বেশিরভাগই আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। ইতিমধ্যে মামলার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নিয়ে নেয় তৃণমূল। কান্দুয়ার আক্রান্তেরাও যোগ দেন তৃণমূলে। ২০০৩ সালের ১৮ জুন এই মামলা উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত থেকে হাওড়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়। অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে তৃণমূলের আইনজীবীরা কলকাতা হাইকোর্টে একাধিকবার আর্জি জানান বিচার দ্রুত শুরু করার জন্য। কলকাতা হাইকোর্ট ছ’মাসের মধ্যে বিচার শুরু করে তা নিস্পত্তি করার জন্য হাওড়া আদালতকে নির্দেশ দেয়।
এই মামলার ১১৯ জন আসামীর মধ্যে ১০ জন মারা গিয়েছেন। এ দিন ১০৯ জনই হাজির ছিলেন। এ ছাড়াও রয়েছেন ৯৬ জন সাক্ষী। অভিযুক্তপক্ষের হয়ে মামলা লড়ছেন রাজ্যের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী নিশীথ অধিকারী নেতৃত্বে এক দল আইনজীবী। অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবীদের সাহায্য করার জন্য আছেন তৃণমূল-সহ বিভিন্ন বামবিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীরা। এসেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “আশা করি আক্রান্তেরা সুবিচার পাবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.