গুড়াপের হোমে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে এ বার নির্দিষ্ট অভিযোগ তুললেন সেখানকার এক প্রাক্তন আবাসিক তরুণী। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন। দুঃস্থ বলে বেশ কিছু দিন ওই হোমে ছিলেন। বর্তমানে গড়িয়ার একটি হোমে থাকা ওই তরুণী লিখিত ভাবে দিন কয়েক আগে ওই অভিযোগ দায়ের করেন সিআইডি-র কাছে। সিআইডি-র অনুরোধে মঙ্গলবার রাতে গুড়াপ থানার পুলিশ দাদপুরের দেবব্রত নিয়োগী নামে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে। বুধবার চুঁচুড়া আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের এজলাসে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। |
আদালতের পথে দেবব্রত।—নিজস্ব চিত্র। |
এত দিন ওই হোমের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা দাবি করছিলেন, ওই হোমে মহিলা আবাসিকদের উপরে যৌন নির্যাতন চালানো হত। ‘নির্যাতনের’ পিছনে ছিলেন হোমের সম্পাদক, ধৃত উদয়চাঁদ কুমার এবং তাঁর ‘ডান হাত’ শ্যামল ঘোষ। এ বার দুঃস্থ ওই মহিলা ধর্ষণের নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করায় হোমে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি আরও জোরালো হল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ১১ জুলাই হুগলির গুড়াপের ‘দুলাল স্মৃতি সংসদ’ নামে ওই হোমের পাঁচিলের পাশের একটি পুকুরের মাটি খুঁড়ে গুড়িয়া নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক আবাসিক মহিলার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার পরেই হোমের ‘কাণ্ডকারখানা’ প্রকাশ্যে আসে। জামালপুরে মাটি খুঁড়ে মেলে কিছু দেহাবশেষ। যা ওই হোমেরই আবাসিকদের বলে দাবি তদন্তকারীদের। পরে এক আবাসিক যুবতীর দেহে ‘কপার-টি’ (অস্থায়ী গর্ভ নিরোধক) মেলায় হোমে যৌন নির্যাতনের প্রসঙ্গটি আরও জোর পায়। গুড়াপ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দেবব্রত কেন্দ্রীয় একটি স্বাস্থ্য প্রকল্পের ঠিকা-কর্মী ছিলেন। সেই সুবাদে দীর্ঘ দিন ধরেই ওই হোমে যাতায়াত ছিল তাঁর। উদয়চাঁদের সঙ্গেও দেবব্রতর ‘ওঠাবসা’ ছিল। সেই সুযোগ নিয়েই সেখানকার আবাসিকদের উপরে তিনি নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ। এ দিন ধৃত এবং অভিযোগকারিণী দু’জনেরই ডাক্তারি পরীক্ষা হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, আদালতের কাছে গোপন জবানবন্দি দেবেন ওই তরুণী। |