|
|
|
|
পুলিশি ‘প্রয়াস’, কমছে অপরাধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
বিলেতের ‘কমিউনিটি পুলিশ সার্ভিস’-এর অনুকরণেই ত্রিপুরায় চালু হয়েছে ‘প্রয়াস’। আর তার ‘সুফল’ও হাতেনাতে মিলতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন রাজ্য পুলিশের এক আইজি। তাঁর দাবি, ‘প্রয়াস’ কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থা ত্রিপুরায় চালু হওয়ার পর পুলিশকর্মীরা জনগণের উদ্দেশে আরও বেশি করে ‘সহযোগিতার’ হাত বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছেন। এর ফলে বাড়ছে জনসংযোগ। কমছে অপরাধ।
জনগণকে সাহায্যের ব্যাপারে রাজ্যের প্রতিটি থানায় সুস্পষ্ট প্রশাসনিক নির্দেশ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের আইজি নেপাল চন্দ্র দাস। এই নির্দেশ অনুসারে, যে কেউ থানায় এসে অভিযোগ করলে এফআইআর বা জিডি হিসেবে তা দ্রুত লিপিবদ্ধ করতে হবে। তার প্রেক্ষিতে শুরু করা হবে প্রাথমিক তদন্ত। পাশাপাশি, এফআইআর বা জিডি’র কপি দিতে হবে অভিযোগকারীকে। আইজি উল্লেখ করেন, ১৮২৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব রবার্ট পিল সাহেবের হাত ধরে ব্রিটেনে প্রথম ‘কমিউনিটি পুলিশি ব্যবস্থা’ চালু হয়। পরবর্তী কালে তা চালু হয় কমনওয়েল্থভুক্ত অন্যান্য দেশগুলিতে। ত্রিপুরায় পুলিশ প্রধান থাকাকালীন ২০১০ এর শেষের দিকে এই ‘প্রয়াস’ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন সেলিম আলি। ‘প্রয়াস’ ব্যবস্থা অনুযায়ী, যদি কেউ নিজে লিখিত আকারে এফআইআর বা জিডি জমা দিতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে থানার পুলিশকর্মীই অভিযোগকারীর হয়ে তা লিখে দেবেন। অভিযোগটি যথাযথ লেখা হয়েছে কি না, তা পড়েও শুনিয়ে দেওয়া হবে। তার পর অভিযোগকারীর স্বাক্ষর নিয়ে তা গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকর্মী। এই ভাবে ‘প্রয়াস’ কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থার মাধ্যমে বেশ কিছু দিন ধরেই ‘জনসংযোগ’ বাড়ানো শুরু করেছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন।
এ ছাড়া ‘প্রয়াসে’র মাধ্যমে রাজ্য পুলিশকে আরও ‘জনমুখী’ এবং পুলিশ আইন আরও ‘কার্যকর’ করে তুলতে সম্প্রতি ‘একগুচ্ছ’ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যেমন, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ঘটনার দ্রুত তদন্ত শুরু করা এবং এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। পথ দুর্ঘটনাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত পুলিশি সহায়তা প্রদান। কোনও আসামী ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকে জানানো। মহিলা আসামীকে গ্রেফতারের সময়ে মহিলা পুলিশকে সঙ্গে নেওয়া এবং অবশ্যই মহিলা পুলিশের উপস্থিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা।
আইজি নেপাল দাস বলেন, ‘প্রয়াস’ চালু হওয়ার পর, বিশেষ করে মহিলা সংক্রান্ত অপরাধ এবং পথ দুর্ঘটনার মাত্রা বর্তমানে ২০১০-এর তুলনায় অনেকটাই কমেছে। মহিলা সংক্রান্ত অপরাধ ২০১০-এ ঘটে ১৭৭৮টি। ২০১১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৪৭৮টি। পথ দুর্ঘটনা ২০১০ সালে ঘটে ৯০১টি। ২০১১ সালে কমে হয় ৮৩৪টি। কমছে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও। আইজি-র দাবি, রাজ্যে জঙ্গি তৎপরতা হ্রাস পাওয়ারও অন্যতম কারণ হল স্থানীয় ‘এসপিও’দের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনের ‘জনসংযোগ’ বৃদ্ধি। |
|
|
|
|
|