কোথাও ভাঙা, কোথাও লোপাট ত্রিফলা আলোর সজ্জা
পুরো শহর সেজে ওঠার আগেই ত্রিফলা আলো অকেজো হওয়ার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। হচ্ছে চুরিও। যাতায়াতের পথে এ সবই খেয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এ সব দেখে রীতিমতো বিরক্তও হয়েছেন। কেন ওই হাল, কেন দেখভাল করা হয় না, তা নিয়ে কাউকে কাউকে বকাবকিও করেছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দেওয়ার পরেও ত্রিফলা আলো রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভার নজরদারি তেমন বাড়েনি। এ ব্যাপারে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কিছু আলো খারাপ হয়ে গিয়েছে। কিছু আবার চুরিও হচ্ছে।”
লন্ডনের ধাঁচে কলকাতাকে গড়ে তোলা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন। আর এ নিয়ে অনেক সমালোচনাও হজম করেছেন তিনি। তবুও দমেননি। শহরকে নীল সাদা রঙে সাজানো বা নানা রাস্তা ত্রিফলা আলোয় ভরিয়ে দেওয়ার প্রকল্প তাঁরই মস্তিস্কপ্রসূত।
রামতনু সরকার লেন চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ মহম্মদ আলি পার্ক
মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার আগেই দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ তহবিলের টাকায় তাঁর এলাকায় সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুরসভা সাজাতে ত্রিফলা আলো লাগানোর নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, শুধু সাজানো নয়, তা রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারেও তাঁর নজর তীক্ষ্ন। মহাকরণ থেকে যাতায়াতের পথে কোথাও কোনও ত্রুটি চোখে পড়লেই গাড়ি থামিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। তার পরই তা সারানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ করেন।
শহরের সৌন্দর্যায়নের কাজে কোনও খামতি দেখলেই বকাবকিও করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তাতেও কাজ যে হচ্ছে না, তার নমুনা মিলেছে শহরের কয়েকটি রাস্তায় ত্রিফলা আলোর হাল দেখেই। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, বিবেকানন্দ রোড, হরিশ মুখার্জ্জি রোড, নজরুল ইসলাম সরণি-সহ আরও অনেক রাস্তায় বসানো ত্রিফলা আলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোনওটিতে বাতি নেই, কোনওটি আবার জ্বলে না। কোনওটির আবার বাতিস্তম্ভই হেলে পড়ে রয়েছে।
পুরসভার একাধিক মেয়র পারিষদের বক্তব্য, আলো দফতরের গাফিলতিতেই এ সব ঘটনা ঘটেছে। তারা রক্ষণাবেক্ষণের চেয়ে আলো লাগানোর দিকেই বেশি মন দিয়েছেন। উত্তর কলকাতার এক তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, “পুরসভার কর্মী সেজে একদল দুষ্কৃতী ত্রিফলা আলো চুরি করছে। তাদের সঙ্গে দফতরেরও যোগসাজস রয়েছে। ওই মাল আবার নতুন সেটে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।” এ নিয়ে আলো বিভাগের ডিজিকেও একাধিক বার সতর্ক করা হয়েছে বলে পুর সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবুও কোনও কাজ হয়নি। মেয়র শোভনবাবুও বলেন, “ত্রিফলা আলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষ নজর দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী আমাকে আগেই বলেছিলেন। ডিজি (আলো)-কে ব্যাপারটা বলেছি।”
চুরি আটকানো যাচ্ছে না কেন?
শোভনবাবু বলেন, “বেশ কয়েক বার পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। কমিশনারকেও বলেছি। প্রয়োজনে আবার বলব।” যদিও এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, “এত সংখ্যক আলো রক্ষণাবেক্ষণ করা কি পুলিশের কর্ম? অত ফোর্স কোথায়? পুরসভাকেও সজাগ থাকতে হবে।” পুরসভা সূত্রে খবর, ওই আলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিরাপত্তারক্ষী রাখা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে পুর-প্রশাসন।

ছবি: প্রদীপ আদক
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.