|
|
|
|
‘জালিয়াতি’ করে পুলিশের জালে দম্পতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বলিউডের ‘বাবলি’ এ বার কলকাতার অভিনেত্রী। অন্তত জেরায় তিনি তেমনই জানিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। আর সিনেমার ‘বান্টি’ সত্যিই তাঁর স্বামী। মুম্বইয়ের একটি বস্ত্র বিপণন সংস্থা তাঁদের সংস্থার থেকে ৪৫ লক্ষ টাকার কাপড় কিনতে চায় বলে একটি ব্যাঙ্ককে জানিয়েছিলেন ‘বাবলি’-‘বান্টি’। শেষে জানা গেল, মুম্বইয়ে ওই সংস্থাই নেই। ততক্ষণে ওই দম্পতির বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৪৫ লক্ষ টাকা। ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে বুধবার গ্রেফতার হলেন ওই অভিনেত্রী, তাঁর স্বামী ও এক ব্যক্তি।
পুলিশ জানায়, ধৃত ‘বাবলি’র আসল নাম কস্তুরী রায় ওরফে কস্তুরী বেরা। ‘বান্টি’র নাম কৃষ্ণেন্দু রায় ওরফে কৌশিক বেরা। কস্তুরী বাংলা ছায়াছবি, সিরিয়াল ও যাত্রায় অভিনয় করেছেন বলে জানান। ধৃত তৃতীয় ব্যক্তির নাম অজয় ঠাকুর। যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, কস্তুরী-কৌশিক ধরা পড়েন তাঁদের বাড়ি থেকে। অজয় গ্রেফতার হন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কসবা শাখা থেকে। ওই শাখায় জেনারেটর সরবরাহ করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কসবা শাখায় কস্তুরী-কৌশিকের সংস্থার অ্যাকাউন্ট। ওই শাখার কর্তৃপক্ষকে রায় দম্পতি জানান, যে সংস্থা তাঁদের থেকে মাল কিনতে চায়, সেটির অ্যাকাউন্ট একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দক্ষিণ মুম্বই শাখায়। এ ক্ষেত্রে মুম্বইয়ের ব্যাঙ্কটির কসবার ব্যাঙ্ককে ‘লেটার অফ ক্রেডিট’ (এলসি) দেওয়ার কথা। ওই ‘এলসি’-ই প্রমাণ যে, মুম্বইয়ের সংস্থা কলকাতার সংস্থার কাছ থেকে কাপড় কিনতে চায়। সেটির ভিত্তিতেই প্রাপ্য বাবদ কসবার ব্যাঙ্কটির ৪৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা কস্তুরী-কৌশিককে। এর ৯০ দিনের মধ্যে কসবার ব্যাঙ্কটিকে ৪৫ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা মুম্বইয়ের ব্যাঙ্কটির।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছর পুজোর আগে মুম্বইয়ের ব্যাঙ্ক কসবার শাখাকে ‘এলসি’ পাঠায়। তার ভিত্তিতে কসবা শাখা কস্তুরী-কৌশিকের অ্যাকাউন্টে ৪৫ লক্ষ টাকা জমা করে। নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময়ে কস্তুরী-কৌশিকের সংস্থা কসবার শাখাকে জানায়, মুম্বইয়ে মাল পাঠানো হয়ে গিয়েছে। ৩ মাস পরে কসবার শাখা মুম্বইয়ের ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা ফেরত চায়। সেই টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় সন্দেহ হয় কসবা শাখার। জানা যায়, মুম্বইয়ের সংস্থা থেকে শুরু করে ‘এলসি’ সবই ভুয়ো। শুধু তাই-ই নয়, মুম্বইতে মাল পাঠানো হয়েছে বলে কসবা শাখায় যে নথি দেখিয়েছিলেন রায় দম্পতি, সেটিও জাল। শেষে এ বছরের জুন মাসে কসবার শাখার তরফে অভিযোগ করা হয় পুলিশে। তদন্ত ভার নেন ব্যাঙ্ক-জালিয়াতি দমন শাখার সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীলকণ্ঠ রায়।
তদন্তে গোয়েন্দারা জেনেছেন, গত বছরের ১৯ অক্টোবর রায় দম্পতির অ্যাকাউন্টে ৪৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। সে দিনই দু’খেপে নগদ টাকা তুলেছিলেন কৃষ্ণেন্দু (৯ লক্ষ ৪০ হাজার) ও অজয় (৯ লক্ষ ৭৫ হাজার)। বাকি টাকা কস্তুরী-কৌশিকের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছিল। আপাতত ১৮টি অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|