|
|
|
|
‘ম্যাজিস্ট্রেট’ থাকবেন সিপি-ই |
জেলাশাসক নয়, কলকাতা এখন পাচ্ছে কালেক্টর |
সুপ্রকাশ চক্রবর্তী |
জেলাশাসক নয়, আপাতত জেলা কালেক্টরকে মাথায় রেখেই চালু হবে কলকাতা জেলার সাধারণ প্রশাসন।
বুধবার মহাকরণে মুখ্যসচিব সমর ঘোষের সভাপতিত্বে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর, কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পুরসভার পদস্থ অফিসারদের মধ্যে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কলকাতার প্রথম জেলা কালেক্টরের কার্যালয় হবে হরিশ মুখার্জি রোডে এসএসকেএম হাসপাতালের বিপরীতে একটি সরকারি ভবনে। সেখানে কলকাতার জেলা কালেক্টর ছাড়াও বসবেন কলকাতার এক জন অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং এক জন মহকুমা শাসক (সদর)।
পূর্ণাঙ্গ জেলা হওয়ার পর কলকাতা কালেক্টরেটের ট্রেজারিই কলকাতা জেলার ট্রেজারি হিসেবে কাজ করবে। কলকাতায় যেহেতু গ্রামীণ এলাকা নেই, সে জন্য এখানে কোনও ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) থাকবেন না। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে কলকাতা জেলায় সাধারণ প্রশাসন তৈরির প্রস্তাব অনুমোদনের পর তা কার্যকর করার দিনক্ষণ ঠিক হবে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা জেলার জন্য এখন আলাদা করে কোনও সাধারণ প্রশাসন নেই। রয়েছে শুধু পুর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, পুলিশ ও পুর-পরিষেবার বাইরেও প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের অন্য নানা প্রয়োজন থাকে। প্রশাসনের কাছে জাতিগত শংসাপত্র, আবাসিক শংসাপত্র, প্রভৃতির জন্য তাঁদের যেতে হয়।
কলকাতা ছাড়া বাকি সব জেলায় সেই সব শংসাপত্র দেওয়ার কাজ হয় জেলাশাসকের কার্যালয় বা জেলাশাসকের অধীনস্থ সাধারণ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের দফতর থেকে। থাকে আলাদা ট্রেজারি।
এখন কলকাতার বাসিন্দাদের সেই সব শংসাপত্রের জন্য কখনও ছুটতে হচ্ছে আলিপুরে, কখনও মহাকরণে, কখনও বা সল্টলেকে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকের কার্যালয়ে।
এই সমস্যা কাটাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য জেলার মতো কলকাতাকেও একটি পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, অন্যান্য জেলায় জেলাশাসক তথা জেলা কালেক্টর হিসেবে এক জন আধিকারিকই সাধারণ প্রশাসনের শীর্ষে থাকেন। জেলাশাসক ও তাঁর অধীনস্থ শীর্ষ আধিকারিকেরা জেলার মধ্যে প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। অন্য দিকে, কালেক্টর হিসেবে সেই জেলাশাসকই আবার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন।
কলকাতায় এখনই জেলাশাসক নিয়োগ করা হচ্ছে না। কারণ, চিরাচরিত ভাবে কলকাতায় প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা রয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের হাতে। পুলিশ কমিশনারই এখন কলকাতায় ১৩৩, ১৪৪, ১৪৫ ধারার মতো ফৌজদারি কার্যবিধির বিভিন্ন ধারা প্রয়োগের অধিকারী। পুলিশ কমিশনারের পদমর্যাদা রাজ্য সরকারের সচিবের সমতূল।
তুলনায় নবীন কোনও আধিকারিককে এখনই কলকাতার জেলাশাসক নিয়োগ করে তাঁর হাতে প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা তুলে দেওয়া হলে গোড়া থেকে পুলিশের সঙ্গে সাধারণ প্রশাসনের টানাপোড়েনের আশঙ্কা থাকবে। তাই কলকাতায় আপাতত জেলা কালেক্টর নিয়োগ করে তাঁর হাতে রাজস্ব আদায়ের এবং সাধারণ প্রশাসনের অন্যান্য ক্ষমতা দেওয়া হবে।
পরে এ ব্যাপারে পুলিশ আইন সংশোধন করে কলকাতার জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারের মধ্যে প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার বিন্যাসের কথা ভাবা হয়েছে। সেই প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার পর কলকাতার জন্যও নিযুক্ত হবেন পুরোদস্তুর এক জন জেলাশাসক তথা জেলা কালেক্টর। |
|
|
|
|
|