জিটিএ-র সঙ্গে উদ্যোগ
মিরিকে কৃষি-পর্যটন প্রকল্প করবে রাজ্য
বার কৃষির সঙ্গে পর্যটনের মেলবন্ধনে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, গ্রামীণ কৃষি ব্যবস্থাকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বুনিয়াদ কিছুটা হলেও এতে উপকৃত হবে বলে মনে করছেন পর্যটন দফতরের কর্তারা। কৃষি পর্যটনের প্রথম উদ্যোগ হিসাবে দার্জিলিং পাহাড়ের ‘মিরিক বস্তি’কে বাছাই করা হয়েছে। এ সপ্তাহে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) গঠন হতে চলছে। তার পরেই জিটিএ-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পর্যটন দফতর এই প্রকল্পের কাজ শুরু করবে। পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিংহ বলেন, “গ্রামীণ পর্যটনের আরেকটু বড় ধাপ কৃষি পর্যটন বা এগ্রি ট্যুরিজম। পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরণের প্রকল্প রয়েছে। এবার আমরা তা রাজ্যে চালু করতে চাইছি। কমলালেবুর জন্য বিখ্যাত পাহাড়ের মিরিক বস্তিতে বাছাই করা হয়েছে। কিছু পরিকাঠামোগত কাজ করতে হবে। জিটিএ গঠনের পরেই যৌথভাবে আমরা এই প্রকল্পে হাত দেব।” পাশাপাশি, ডুয়ার্সের লাটাগাড়িতে চা বাগিচার আদিবাসী মহল্লা এবং সুন্দরবন এলাকায় মধু সংগ্রহকারীদের এলাকায় গ্রামীণ পর্যটন গড়ে তোলা হবে বলে পর্যটন মন্ত্রী জানিয়েছেন। শিলিগুড়ি শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার এবং দার্জিলিং শহর থেকে ৪৯ কিলোমিটার দূরে কার্শিয়াং মহকুমা ছোট্ট শহর মিরিক। পর্যটকদের কাছে মিরিক লেকের আকর্ষণ কম নয়। পাশাপাশি, মিরিক বস্তির কমলালেবু প্রসিদ্ধ। পাশাপাশি, সৌরিনি বস্তি এলাকাতেও প্রচুর কমলালেবু হয়। পাহাড়ের ঢাল তো বটেই প্রতি বাড়ির খোলা অংশে মিরিকে কমলালেবু গাছের দেখা মেলে। উত্তরবঙ্গ থেকে উৎপাদনের একটি বড় অংশ কমলালেবু মিরিকে উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রায় ৫০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে মিরিকে কমলালেবুর বাগিচা রয়েছে। ছোট থেকে বড় নানা মাপ, ওজনের কমলালেবু এই অঞ্চলে হয়ে থাকে। পার্শ্ববতী দেশ ভুটান এবং দেশের নাগপুর থেকে কমলালেবু এই অঞ্চলে আসলেও মিরিকের কমলালেবু বরাবরই কদর আলাদা। এবার এই মিরিক কমলালেবুকে ঘিরেই কৃষি পর্যটন করবে পর্যটন দফতর। দফতরের কয়েকজন কর্তা জানান, সারা বছর মিরিক বস্তিতে কমলালেবুর বাগিচার পরিচর্যা হয়ে থাকে। শীতের শুরুতরেই কমলালেবু বাজারে আসা শুরু হয়। নতুন প্রকল্প অনুসারে, ভরা মরশুমে পর্যটকেরা এলাকায় গিয়ে শুধু থাকবেন না। চাষিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাগিচার পরিচর্যার পাশাপাশি গাছ থেকে সরাসরি কমলালেবু নামাবেন পর্যটকেরা। সেই সঙ্গে খড় দিয়ে কমলালেবু প্যাকিং করে বাক্সবন্দি করার কাজেও পর্যটকেরা হাত মেলাতে পারেন। বছরের অন্য সময়ে বাগানের পরিচর্যা এবং বাকি কাজগুলি কী করে করা হয় তা জানবেন পর্যটকেরা। এই কাজে ছোট ফার্ম হাউস, গ্রামীণ গোষ্ঠীর সাহায্য নেওয়া হবে। কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশে আপেলের বাগানে এমন ব্যবস্থা রয়েছে। কমলার সঙ্গে ব্লকের এলাচ এবং ওষুধের হিসাবে ব্যবহার করা গাছপালা এবং অর্কিড নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। পর্যটন দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় কার্শিয়াঙের বিধায়ক গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা রোহিত শর্মা। তিনি বলেন, “এটা পর্যটন দফতরের খুবই ভাল উদ্যোগ। সরকারের সঙ্গে জিটিএ একযোগে কাজ করবে। প্রথমে কিছু পরিকাঠামোগত কাজ করতে হবে। কমলালেবু বাগানের পোকার মড়ক, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চাষির ঠিকঠাক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলছি।” পর্যটন দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানাচ্ছেন, কৃষি পর্যটন নামে প্যাকেজে এলাকায় ঘোরারও ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে মিরিক লেক, রক গার্ডেন, লেপচা ভিলেজে পর্যটকেরা ঘুরতে পারবেন। থাকার ব্যবস্থা হিসাবে সরকারি এবং বেসরকারি লজগুলিতে ব্যবহার করা হবে। প্রকল্পটি সফল হলে তা রাজ্যের অন্যত্র বিখ্যাত কৃষিপণ্য ধরে ধরে করার সম্ভাবনা তৈরি হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.