সাঁইথিয়া-চৌহাট্টা সড়কের উপর দিয়ে সাঁইথিয়া ও লাভপুর-সহ বিভিন্ন রুটের ৮টি বাস চলাচল করে। কিন্তু দিন পনেরো হল লাভপুরের হাতিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে থাকা একটি কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় ওই রুটে যানচলাচল বন্ধ হয়ে রয়েছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন মানুষজন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের উপর দিয়েই গিয়েছে জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের সাঁইথিয়া-চৌহাট্টা সড়কটি। হাতিয়া বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া হিউম পাইপের কালভার্টটি দিন ১৫ আগে ভেঙে যায়। অভিযোগ, তার পরে বার বার আবেদন জানানো হলেও প্রশাসন সেটি পুনর্নির্মাণের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ ওই রাস্তায় বিভিন্ন রুটের ৮টি বাস ছাড়াও বহু ট্রাক-সহ অন্য যানবাহন চলে। সাঁইথিয়া এবং লাভপুর কলেজ, বাজারহাট, অফিস-আদালতে যেতে হলে এলাকার বাসিন্দাদের ওই রুটের বাস ধরে যাতায়াত করতে হয়। লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শিউলি বাগদি, সাঁইথিয়া অভেদানন্দ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কাকলি ঘোষরা বলেন, “বাস বন্ধ থাকায় আমাদের তিন-চার কিমি দূরের বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাস ধরে কলেজে যেতে হচ্ছে। নয় তো যন্ত্রচালিত রিকশা বা মোটরবাইক করে কলেজে যেতে হচ্ছে।” একই সমস্যা অন্যদেরও।
স্থানীয় বাসিন্দা সাত্তার মির্জা, সুভাষদের ক্ষোভ, “লাভপুরে ব্লক অফিস কিংবা হাসপাতাল যাওয়ার জন্য এই রাস্তাটি আমাদের অন্যতম ভরসা। কিন্তু কালভার্টের কারণে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আমাদের চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” সমস্যায় পড়েছেন কৃষিজীবীরাও। |
তাপস গড়াই, জামির শেখরা বলেন, “রাস্তা দিয়ে আমাদের কৃষিজাত পণ্য বাজারহাটে বিক্রি করতে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় সে সুযোগ আমাদের হারাতে হয়েছে। এর ফলে জলের দরে সব্জি বা অন্য ফসল পাইকারদের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের পক্ষ থেকে গত বছরই ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হয়। সে সময় গ্রামবাসীরা ওই কালভার্টটি বড় আকারের করার দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, গ্রাম এবং মাঠ ভাসা জল কালভার্ট উপচে বাড়িঘর ও রাস্তা ছাপিয়ে যেত। কিন্তু প্রশাসন সেই সময় তাঁদের দাবি গ্রাহ্য করেনি। এমন কী ভেঙে যাওয়া হিউম পাইপের কালভার্টটি পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা হয়নি। সমস্যার কথা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট লাভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের নদেরচাঁদ বাগদি বলেন, “কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় সত্যিই এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন। পুনর্নির্মাণের জন্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনও লাভ হয়নি।” সংশ্লিষ্ট বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র জাহ্নবী কোনার বলেন, “কালভার্টটি পুনর্নির্মাণের জন্য আমাদের দফতরের কর্মীরা গ্রামে গিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীরাই সেটি সম্প্রসারণের দাবিতে সংস্কার করতে দেননি। তবে বর্ষা এবং আর্থিক সমস্যার কারণে এই মুহূর্তে সেটি সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। যদি গ্রামবাসীরা চান তা হলে সাময়িক ভাবে হিউম পাইপ দিয়ে কালভার্ট সংস্কার করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।” |