অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা রেণু সরকার খুনের মামলার প্রথম ধাপের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল বুধবার বোলপুর আদালতে। এ দিন নিহতের ছেলেমেয়ে প্রবাল সরকার ও অদিতি সরকারের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “বোলপুরের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সোমেশপ্রসাদ সিংহের এজলাসে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিন রেণুদেবীর ২ সন্তানের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ৮ অগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলবে।”
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা প্রবালবাবু ও অদিতিদেবীকে এজলাসে আলাদা ভাবে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। রেণুদেবীর মৃত্যুর সময় তাঁরা কোথায় ছিলেন, কে খবর দেন, তাঁদের সঙ্গে রেণুদেবীর শেষ কখন কথা হয়, তখন তিনি কী বলেছিলেন ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়। অদিতিদেবী তাঁদের জানান, ঘটনার দিন অর্থাৎ এ বছরের ১৩ জানুয়ারি রাতে তিনি কলকাতায় ছিলেন। সেই রাতে রেণুদেবী ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাঁকে ফোনে জানিয়েছিলেন, তিনি ভাল আছেন। পর দিন সকালে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়ার বাড়ির (এই বাড়ির দোতলায় রেণুদেবী খুন হন) কেয়ারটেকার উজ্জ্বল তপাদার তাঁকে ফোন করে রেণুদেবীর মৃত্যুর খবর দিয়েছিল। এর পরেই তিনি দাদা প্রবাল সরকারের সঙ্গে শান্তিনিকেতনে আসেন। শান্তিনিকেতনের বাড়িতে এসে তিনি কী দেখেন তাও জানতে চাওয়া হয়। অদিতিদেবী তাঁদের জানান, বাড়িতে এসে রেণুদেবীর মৃতদেহ দেখতে পান। তাঁর ওষুধ ও টাকা যে দু’টি ব্যাগে রাখা ছিল, সেই দু’টি ব্যাগ অবশ্য ঘরে দেখতে পাওয়া যায়নি। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি।” প্রায় এক প্রশ্ন প্রবালবাবুকেও করা হয়। তাঁর কাছে বাগানপাড়ার বাড়ির অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। ধৃত কেয়ারটেকার উজ্জ্বল, এলাকার দুষ্কৃতী মঙ্গল সাহানি ও তার সঙ্গী পিন্টু দাস এখন জেলে। এ দিন তাদের আদালতে আনা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন-ডাকাতির চার্জ গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার খুনের কাজে ব্যবহার করা রড-সহ বহু জিনিস আদালতে আনেন। পুলিশের দাবি, জেরায় রেণুদেবীকে লোহার রড দিয়ে খুন করার কথা কবুল করে মঙ্গল। অন্য দু’জন খুনের ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে পুলিশের দাবি। |