উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার পরে বীরভূমের নলহাটি। শাসন করার ‘অপরাধে’ বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠল একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে।
নলহাটির কয়থা হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার প্রার্থনা চলাকালীন একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্র হাসিঠাট্টা করছিল। ভূগোল শিক্ষক অরিন্দম ঘোষ তাদের চড় কষান। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গিয়েছিল।
কিন্তু বুধবার স্কুলে ঢোকার সময়ে ওই দুই ছাত্র বহিরাগতদের নিয়ে অরিন্দমবাবুর উপরে চড়াও হয় এবং মাটিতে ফেলে মারধর করে বলে অভিযোগ। প্রহৃত শিক্ষককে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রধান শিক্ষক প্রকাশ রায় বলেন, “বহিরাগতদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে স্কুলের দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে অবশ্য পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়নি।
প্রহৃত শিক্ষক অরিন্দমবাবু বলেন, “প্রার্থনার সময়ে শৃঙ্খলা ভাঙায় দুই ছাত্রকে চড় মেরেছিলাম। তারা কোনও হুমকি দেয়নি। কিন্তু এ দিন স্কুলের গেটের সামনে ওরা ১০-১২ জন বহিরাগতকে সঙ্গে নিয়ে আমার উপরে চড়াও হয়। ঘুষি মেরে আমায় মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। অন্য শিক্ষকেরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়।” |
তবে তিনি অভিযুক্ত ছাত্রদের নাম জানাতে চাননি। ইংরেজি শিক্ষক প্রতুল মণ্ডলের প্রশ্ন, “যেখানে ছাত্রদের আমরা সন্তান ও ভাইয়ের মতো ভালবাসি, সেখানে এ রকম ঘটলে শিক্ষার কোনও মূল্য থাকবে কি?” একই প্রশ্ন তুলেছেন স্কুলের অন্য শিক্ষকেরাও।
সম্প্রতি ছাত্রীদের কমনরুমে যেতে নিষেধ করায় গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় বাণী বিদ্যাবীথির কমার্সের শিক্ষককে লোক লাগিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রেও থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
কিন্তু ভবিয্যতের কথা মাথায় রেখে ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে হামলাকারীদের শনাক্ত না করা না পর্যন্ত ছাত্রটিকে স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করা হয়।
তবে কয়থা হাইস্কুলের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে স্কুলের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “আমরা চাই না, স্কুলের ছাত্রদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। স্টাফ কাউন্সিলের জরুরি সভা ডাকা হবে। স্কুল পরিচালন কমিটিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।” |