আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে কালনার ঐতিহ্যবাহী মহিষমর্দিনী পুজো। বুধবার বিকেল থেকেই তাই আশপাশের জেলার বহু মানুষ ভিড় করেছেন শহরে। বসে গিয়েছে নাগরদোলা ও পুতুল নাচের আসরও। চার দিনের এই উৎসবে পুজো ও মেলা প্রাঙ্গনে মানুষের ঢল সামলাতে ব্যস্ততা তুঙ্গে প্রশাসনেরও। পুজোর দিনগুলোতে সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় ইতিমধ্যেই তাই সমস্ত বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন তারা।
কালনার মহিষমর্দিনীতলায় ভাগীরথীর পাশেই মহিষমর্দিনীর মন্দির। বুধবারেই মন্দিরের বিশাল আটচালা আর মন্দির লাগোয়া ধর্মশালায় দূর থেকে ভক্তরা এসে ঠাঁই নিয়েছেন। পুজোর প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছরের মতোই আটচালায় বাঁধা হয়েছে যাত্রা-মঞ্চ। পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তমী থেকে টানা সাত দিন চলবে নানা যাত্রাপালা। আয়োজন করা হয়েছে অন্নক্ষেত্রও। পঙতিভোজের ব্যবস্থা করতে তৈরি হয়েছে সারি দেওয়া বেশ কিছু উনুন। মেলাও প্রায় বসেই গিয়েছে। পরম্পরা অনুযায়ী খাগড়াকোণা থেকে জ্ঞানদা চক্রবর্তী সংস্থার পুতুল নাচও চলে এসেছে। মন্দিরের পিছনেই বসেছে নাগরদোলা। |
বুধবার পুজো প্রাঙ্গনের প্রস্তুতি পর্ব ঘুরে দেখলেন মহকুমা প্রশাসনের তরফে একজন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, পুরসভা, পুজো কমিটি এবং পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল ও বিভিন্ন থানা এলাকার পুলিশকর্মীরাও এ দিনই শহরে পৌঁছে যান। প্রাঙ্গনে কোথাও বিস্ফোরক কিছু রয়েছে কি না দেখা হয় তাও। মহকুমা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য বারের থেকে বেশি ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ বছর। সেই মতো বাড়তে বাহিনীরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন আধিকারিক-সহ প্রায় সাড়ে তিনশো পুলিশকর্মী মোতায়ন করা হয়েছে। শহরের মূল প্রবেশ পথ এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা থাকছে, বসানো হয়েছে সিসিটিভিও। নদিয়া ও হুগলি জেলা থেকে প্রচুর মানুষ আসায় এই জেলা দুটির নানা স্থানেও থাকছে পুলিশ। নদীপথেও শহরে আসেন অনেকে। তাই খেয়াঘাটগুলিতেও থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের তরফে ‘লাইফ সেভিং বোট’-এরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া পুজোর দিনগুলিতে ভিড়ে নজরদারি চালাতে সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “নদীপথে নৌকাগুলি যাতে ঝুঁকি নিয়ে বেশি যাত্রী না তোলে তাই সতর্ক করতে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি থাকবেন স্বেচ্ছাসেবীরাও। আশা করি নির্বিঘ্নেই কাটবে পুজো।” উপ-পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “পুরসভার তরফে প্রতিবারের মতো এ বারও জল, আলো, পুজো প্রাঙ্গন সাফাই ইত্যাদি পরিষেবা দেওয়া হবে।” |